বগুড়ার বধূর মুক্তির জন্য ধানের শীষে ভোট দিন

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সবাইকে নিয়ে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

বুধবার বিকেলে বগুড়ায় এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘আর মাত্র তিনদিন। ৩০ ডিসেম্বর আপনারা আপনাদের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধব যারা ভোটার হয়েছেন, তাদের সবাইকে নিয়ে ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে যাবেন। ধানের শীষে ভোট দিয়ে ভোট গণনা করে বাড়িতে ফিরবেন। বিজয়ের মালা ছিনিয়ে আনতে হবে।’

এ সময় তিনি বগুড়ার বধূ খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ধানের শীষে ভোট চান।

বগুড়া সদর উপজেলার বাঘোপাড়া শহীদ দানেশ উদ্দিন স্কুল ও কলেজ মাঠে এই জনসভায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও বক্তৃতা করেন। তিনি সেনাসদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সেনাবাহিনীর যারা আছেন, সেই ভাইদের বলি- আপনারা দেশের সন্ত্মান। দেশ রক্ষা করা আপনাদের দায়িত্ব। সেই কাজ করেন।’

বগুড়া-৬ (সদর) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সভায় বলেন, ‘এই সরকার একটি জুলুমবাজ-নির্যাতনকারী সরকার। আপনাদের প্রিয় বধূকে (খালেদা জিয়া) তারা কারাগারে আটক করে রেখেছে। আপনাদের নেত্রীকে আটক করে রেখেছে বিনা অপরাধে। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিয়াত্তরের উপরে তার বয়স। তিনি ভালো মানুষ কারাগারে গেলেন এবং এখন তাকে হুইল চেয়ারে চলতে হয়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই নেত্রী সেই নেত্রী। যিনি আপনাদের প্রিয় ছেলেকে (প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান) হারানোর পর থেকে কোনো দিন পরিবারের দিকে তাকাননি; জনগণকে-দেশের মানুষকে তার পরিবার মনে করেছেন। সেভাবে তিনি সংগ্রাম করে গেছেন।’

ভোটারদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, আমি প্রার্থী নই, প্রার্থী হচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আর মাত্র তিন দিন পরে ৩০ ডিসেম্বর, সেদিন নির্ধারিত হবে, আপনাদের পুত্রবধূ আপনাদের মাঝে সসম্মানে ফিরে আসছেন কি না?’

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমাদের অনেক ভাই গুম হয়ে গেছে, খুন হয়েছে। অনেকে কারাগারে রয়েছে, আমাদের দায়িত্ব তাদের মুক্ত করা দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। সারাদেশের মানুষের একটাই আকাঙ্খা, পরিবর্তন এবং পরিবর্তন। তারা এই সরকারের পরিবর্তন চায়। তারা আওয়ামী লীগকে সরাতে চায়।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসন্ন নির্বাচন দেশ এবং জনগণের জন্য গুরল্ফম্নত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত্ম গৃহীত হবে যে আমরা কি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে পাব, কি পাব না? এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত্ম গৃহিত হবে যে আমরা আমাদের স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারব, কি পারবো না? এটা কি এক ব্যক্তি অথবা দলের শাসনের পরিণত হবে, না কি বহুদলের বহু মানুষের শাসনের দেশে পরিণত হবে।’

মাহমুদুর রহমান মান্না ধানের শীষের নেতা-কর্মীদের প্রতিদিন গ্রেফতার করা হচ্ছে অভিযোগ তুলে বলেন, এত গ্রেফতারের পরও সরকার ধানের শীষের কর্মীদের থামাতে পারছে না। পুলিশ গ্রেফতার করে ১ কর্মী, কিন্তু রাস্টত্মায় বের হয়ে যায় ১০ কর্মী। একইভাবে গ্রেফতার যদি করে ১০ জনকে, ঘর থেকে বের হয়ে যায় ১০০ মানুষ।’

তিন দিন পর আসল খেলা হবে মন্তব্য করে মান্না বলেন, ‘পুলিশের ভাইদেরকে বলি মেহেরবানি করে ভাল হয়ে যান। পুলিশ একটু একটু ভাল হচ্ছেও বোধহয়। আজকে দুপুর বেলায় একদল পুলিশ কর্মকর্তা ড. কামালের ওখানে গিয়েছিলেন। আমরা মনে করেছিলাম গ্রেফতার করতে গেছে। ৫/৭টি ট্রাক। অফিসার গেছে এসপি লেবেলের ৪/৫জন। পরে খবর পেলাম তারা ড. কামালের কাছে মাফ চেয়েছেন। আর ড. কামাল তাদের বলেছেন তোমরা পুলিশের লোক আমাদের ছেলের মত, আমাদের ভাইয়ের মত। মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার কর। কেউ তোমাদের কিছু বলবে না। বিজিবির সদস্যদেরও একই কথা বলি।’

বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপি সভাপতি মাফতুন আহম্মেদ খান রুবেলের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তৃতা করেন বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন, সহ-সভাপতি আলী আজগর হেনা ও জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা।

বিএ-২২/২৬-১২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)