পল্টি খেলেন বগুড়ার বাবলু

বগুড়া-৭ আসনে দলের প্রার্থী শূন্য হয়ে যাওয়ায় বগুড়া-৭ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম বাবলুকে সমর্থন দেয় বিএনপি। উপজেলা নির্বাচনে মাত্র ১৭ ভোট পাওয়া স্বতন্ত্র এই প্রার্থী বিএনপির সমর্থন নিয়ে ট্রাক মার্কার এক লাখ ৯০ হাজার ২৯৯ ভোট পেয়ে তিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ধানের শীষের ঘাঁটিতে দলটির কর্মী-সমর্থকদের ভোটে জিতে এসে বিএনপির সঙ্গেই পল্টি নিয়েছেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু।

বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা দলীয় সিদ্ধান্তে শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকলেও সংসদ সদস্য হিসেবে ঠিকই শপথ নিয়েছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কিছু না জানিয়ে তার এই শপথ নেওয়ায় হতবাক বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তিনি এভাবে শপথ নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

বাবলু রাজনীতিবিদ নন, একসময় জেলা আদালত এলাকায় টাইপিস্ট ছিলেন। একটি অখ্যাত অনলাইন পত্রিকার নাম ব্যবহার করে তিনি নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিতেন। তার তেমন কোনো জনপ্রিয়তা বা গ্রহণযোগ্যতা ছিল না। একাধিকবার স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন প্রার্থী হয়ে জামানত হারান তিনি। মূলত: প্রার্থী হওয়ার মাধ্যমে বিভবানদের কাছ থেকে ভোটের খরচ চেয়ে টাকা কামানোই ছিল তার লক্ষ্য। অভাবনীয়ভাবেই এবারের নির্বাচনে বাবলু বিএনপির সমর্থন পেয়ে যান এবং বিপুল ভোটে জয়ী হনে।

বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসন এলাকাতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান। এই আসনটিতে বরাবরই বিএনপি প্রার্থী দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচিত হয়ে আসছেন। দূর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দি খালেদা জিয়া এবার নির্বাচনে অযোগ্য হন।

বিএনপি থেকে গাবতলী উপজেলা চেয়ারম্যান মোরর্শেদ মিলটন ও শাজাহানপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সরকার বাদল মনোনয়রপত্র জমা দেন এই আসনে। দুইজনেই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ায় নির্বাচন কমিশন তাদের প্রার্থীতা বাতিল করে। ফলে ওই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী শূন্য হয়ে যায়। এ অবস্থায় স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম বাবলুকে বিএনপি সমর্থন দেয়।

বিএনপির সমর্থন পাওয়ার পরই কপাল খুলে যায় উপজেলা নির্বাচনে মাত্র ১৭ ভোট পাওয়া বাবলুর। আসনটিতে বিএনপির অবস্থান জানানোর জন্য উঠেপড়ে লাগে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। ফলে ট্রাক প্রতীকে নির্বাচন করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে প্রায় দেড় লাখ বেশি ভোট পান বাবলু।

অথচ বিজয়ী হওয়ার পর রেজাউল করিম বাবলু দলটির নেতাকর্মীদের এড়িয়ে চলতে থাকেন। পরে দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে বিএনপির অন্য সাংসদরা শপথ না নিলেও রেজাউল করিম বাবলু অনেকটা চুপিসারে শপথ নেন। তার শপথ নেওয়ার খবরে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বিএ-১৩/০৫-০১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)