দেওয়া হয়েছে মরিচা ধরা এক্স-রে মেশিন, বাক্সবন্দি ৫ বছর

স্বাস্থ্যসেবায় জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স শ্রেষ্ঠ স্থানে থাকলেও এক্স-রে মেশিন বিকল থাকায় সাধারণ মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বিগত ৫ বছর ধরে এক্সরে মেশিন বিকল হয়ে পড়ে থাকায় বর্তমানে অনিবন্ধিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোই রোগীদের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে। তবে গত বছরে আধুনিক এক্স-রে মেশিন ক্রয়ের ব্যবস্থা করা হলেও সঠিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করায় ক্রয়কৃত এক্স-রে মেশিনটি বন্দি হয়ে হাসপাতালের এক্স-রেরুমে পড়ে আছে। অভিযোগ রয়েছে, সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মানসম্মত এক্সরে মেশিন দেয়নি।

জানা যায়, খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০০৩ সালে এক্সরে বিভাগ চালু হয়। ওই সময় থেকেই প্রতিদিন ইনডোরের অন্তত ৭-৮ জন রোগীর এক্সরে করা হতো। কিন্তু গত ২০১৭ সাল থেকে এক্সরে মেশিন বিকল হওয়ায় প্রায় পাঁচ বছর ধরে তা বন্ধ।

ফলে বাধ্য হয়েই হাসপাতালে সেবা নিতে আগত রোগীদের রোগ নির্ণয়ে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিকে গিয়ে অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে। এক্সরে মেশিন বিকল হওয়ায় এই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফার) হামিদুর রহমান কাজল এখন ফার্মেসিতে দায়িত্ব পালন করছেন।

রোগীদের এই ভোগান্তি দূর করতে গত বছরে উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্পের (ইউজিডিপি) আওতায় বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার অর্থায়নে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ লাখ টাকায় ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ই-টেন্ডার হয়।

এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাফাত এন্টারপ্রাইজ প্রা. লিমিটেড যন্ত্রপাতি সরবরাহের কাজটি পায়। পরে কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি সেসব মালামাল হাসপাতালে সরবরাহ করলে এক্সরে মেশিনটি বারকোড বিহীন পুরনো এবং যন্ত্রটির অনেক জায়গায় মরিচা ও দাগ উত্তোলনের অভিযোগ ওঠে।

কিন্তু এই অভিযোগ ওঠার দুই মাসেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা এলজিইডি বিভাগের মধ্যে বিষয়টি সুরাহা হয়নি। যার ফলে প্যাকেটবন্দি হয়ে আছে মেশিনটি। চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী অভিযোগ করেন, বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক্সরে করতে ৪-৫শ’ টাকা লাগে। কিন্তু এটি হাসপাতালে হলে কম খরচে করা যাবে। এতে হয়রানি কমবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা.শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, রোগীদের ভোগান্তি লাঘবে এক্সরে মেশিন প্রদান ও চালু করতে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাসানুর রহমান চৌধুরী বলেন, উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পুরনো যন্ত্রপাতি পরিবর্তনের কথা জানানো হয়েছে। অন্যথায় বিল প্রদান নয়।

তিনি আরও বলেন, এ সমস্যা সমাধানের সাথে নতুন এক্স-রে মেশিনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এসএইচ-২৮/১৮/২২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)