রাবিতে ফাঁকা সিটের তালিকা করছে ছাত্রলীগ, বিপাকে প্রাধ্যক্ষরা

করোনার কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলে বিপুল সংখ্যক সিট খালি হয়েছে। এসব ফাঁকা সিটের তালিকা করছে হল শাখা ছাত্রলীগ। এছাড়া কোন শিক্ষার্থী কবে হল ছাড়বে সে বিষয়ে রুমে রুমে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে তারা। ফলে সিট বণ্টন নিয়ে হল প্রাধ্যক্ষরা পড়েছেন বিপাকে। হল খোলার এক সপ্তাহ না যেতেই রাবিতে সিট দখলে তালা, শিক্ষার্থীকে বের করে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলে কোন সিট কবে ফাঁকা হচ্ছে সে তালিকা করছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সোমবার রাতে শাহ মখদুম হলেও শিক্ষার্থীদের রুমে রুমে গিয়ে তথ্য নিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতারা। নাম এবং কখন মাস্টার্স শেষ হবে, সম্ভাব্য হল ছাড়ার তথ্য নিয়েছেন তারা। অন্যান্য হলেও একইভাবে তালিকার কথা জানা গেছে।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ড. শামসুজ্জোহা হলের ৩৪৪ নম্বর রুম দখলে চারটি তালা ঝোলানো হয়। ১৭ অক্টোবর আবাসিক হল খুলতেই ওই কক্ষ দখল করতে নতুন চারটি তালা দেখা যায়। পরবর্তীতে হল প্রশাসন তালা ভেঙে ফেলে। সূত্র জানায়, তালা খুললে কোনো সমস্যায় পড়তে হয় কিনা এ নিয়ে চিন্তায় ছিলেন হল প্রাধ্যক্ষ। তবে ছাত্রলীগের কেউ কিছু না বলায় হাফ ছেড়ে বাঁচেন প্রাধ্যক্ষ। পরে জানা যায় ওই রুমে ছাত্রলীগের কেউ তালা দেয়নি। তবে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের দুই শিক্ষার্থীর বেড বাইরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।

এদিকে, সিট বণ্টন নিয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান হলে প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে বলে জানা গেছে। ছাত্রলীগ নেতারা হল প্রাধ্যক্ষের উপর ক্ষুদ্ধ হলেও হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সুজন সেন বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেন।

তিনি বলেন, আমার কাছে ছাত্রলীগের নেতারা আসেনি। সিট নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। বিষয়টি যারা ছড়িয়েছে তারা মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে।

তবে চাপের বিষয়টি স্বীকার করেছেন হল প্রাধ্যক্ষরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রাধ্যক্ষ বলেন, কোন সিট কবে ফাঁকা হচ্ছে সেই তালিকা তৈরির দায়িত্ব ছাত্রলীগের নয়। যদি করতে হয় তাহলে হল প্রশাসনই করবে। যে সরকার যখন ক্ষমতায় থাকে তাদের ছাত্র সংগঠনের ছেলেরা একটু সুবিধা নিতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক।

তালিকার বিষয়ে মাদার বখশ হলের প্রাধ্যক্ষ ড. শামীম হোসাইন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এছাড়া শহীদ হবিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলামর তালিকা তৈরির ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান। তবে শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো প্রকার বাধা ছাড়াই হলে উঠতে পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, জানা মতে ছাত্রলীগ রুমে তালা দেয়নি। এটা তো প্রভোস্ট স্যার সমাধান করে দিয়েছেন। খালি হওয়া সিটের তালিকা করা নিয়ে তিনি বলেন, সংগঠনকে গতিশীল করার জন্য শিক্ষার্থীদের যেকোনো সুবিধা-অসুবিধা দেখা হল কমিটির কাজ। তবে সিটের বিষয় প্রভোস্টই দেখবেন। এ ধরনের ঘটনায় কেউ জড়িত কিনা খোঁজ নিয়ে দেখবো। কেউ যেন সিট বাণিজ্য করতে না পারে সে বিষয়ে তৎপর আছি।

এসএইচ-৩৪/২৬/২১ (শিক্ষা ডেস্ক)