মাদ্রাসাছাত্রকে যৌন নির্যাতনের পর শিক্ষক উধাও!

বগুড়ার শেরপুরে এক মাদ্রাসাছাত্রকে যৌন নির্যাতনের পর মেরে ফেলার হুমকির অভিযোগ উঠেছে এক মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম এরশাদ। কিন্ত তাকে এরশাদ হুজুর বলে ডাকা হয়। তার বাড়ি ধুনটের চালাপাড়া এলাকায়। তিনি মদনপুর দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসার সার্বিক দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক। এরশাদ একাধিকবার ভুক্তভোগী ছাত্রকে যৌন নির্যাতন করেন এবং মুখ না খোলার জন্য বেত্রাঘাত করে মেরে ফেলার হুমকিও দেন।

যৌন নির্যাতরেনর শিকার ওই ছাত্র বলে, ‘আমাক ম্যারা ফেলা দেওয়ার ভয় দেখাছিল। আর কেউ ভয় দেখায়নি, খালি এরশাদ হুজুরই ভয় দেখাছিল।’

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, গত কয়েক মাসে তাদের ছেলেকে কয়েকবার যৌন নির্যাতন করা হয়। সে কাউকে কিছু বলতে না পেরে মাঝে মাঝেই বাড়িতে চলে আসত। বাড়িতে চলে আসার কারণ জানতে চাইলে প্রথমে কিছুই বলতে চায়নি সে, শুধু বলেছে হুজুর মারধর করে। পরবর্তীতে আবার তাকে বুঝিয়ে মাদ্রাসায় পাঠানো হতো।

সর্বশেষ গত ২২ নভেম্বর আবারো শিশুটি বাড়িতে চলে আসে। এবার কারণ জানতে চাপ দিলে ঘটনাটি খুলে বলে সে। কিন্তু ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পরা মাত্র ওই শিক্ষক মাদ্রাসা থেকে উধাও হয়ে গেছে। মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ২০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৫ জনই ওই ঘটনার পর বাড়িতে চলে গেছে বলে জানা যায়।

মদনপুর দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক মো. হাফিজুর ইসলাম বলেন,`আমি এখানে দুই মাস হলো এসেছি। এরশাদ হুজুর এখানে ৬-৭ বছর হলো দায়িত্বে আছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আশিকের সাথে অনৈতিক কার্যক্রম দেখে ফেলেছিল মাদ্রাসার আরেক ছাত্র। পরেরদিন শুক্রবার সে তার চোঁখে দেখা ঘটনার কথা অন্যান্য ছাত্রদেরকে জানিয়ে বাড়িতে পালিয়ে যায়। এর পরেই ঘটনা জানাজানি হয় এবং বেশিরভাগ অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বাড়িতে ফেরত নিয়ে যান।’ অন্যদিকে এরশাদ হুজুরের অনুপস্থিতিতেই এই ঘটনা মিমাংসা ও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন এলাকার কিছু সুবিধাভোগী ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি।

যৌন নির্যাতনের শিকার ছাত্রটির বাবা বলেন, মাদ্রাসার সভাপতি ও সেক্রেটারিসহ এলাকার কিছু লোক বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন। তারা সালিসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। সমাজে এক ঘরে হওয়ার ভয়ে তারা আইনের আশ্রয় নিতে সাহস করছেন না বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার শেরপুর থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এসএইচ-৩৩/০৭/৩২ (শিক্ষা ডেস্ক)