ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে আবাসিক হলে সিট দখলের অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের সিটগুলো দখল করছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আবাসিক হলের বরাদ্দকৃত রুম থেকে এক শিক্ষার্থীকে নামিয়ে দিয়ে সেখানে অন্য শিক্ষার্থীকে তুলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে রাবি ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। পরে হলের আবাসিক শিক্ষক সাজু সরদার এসে ঐ শিক্ষার্থীকে সিটে তুলে দেন। শুক্রবার দুপুরে মাদার বখ্শ হলের ১৫৩ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীর নাম জাহিদ হাসান সোহাগ। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। অপরদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মহিবুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও হল প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত সপ্তাহে হল প্রাধ্যক্ষের মাধ্যমে তিনি ১৫৩ নম্বর কক্ষে উঠেন। শুক্রবার দুপুরে ছাত্রলীগ কর্মী সোহাগের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী গিয়ে তার বিছানাপত্র বের করে দেয়। তাকে রুম থেকে চলে যেতে বলেন। বিষয়টি হল প্রাধ্যক্ষকে জানান। পরবর্তীতে প্রাধ্যক্ষ ওই হলের আবাসিক শিক্ষক সাজু সরদারকে পাঠান। সাজু সরদার বিষয়টি সমাধানে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী সোহাগ, হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা প্রিন্স, ছাত্রলীগ কর্মী আশিকুর রহমান অপু নিয়ে প্রাধ্যক্ষের কক্ষে বসেন।

খবর পেয়ে সেখানে কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত হন। আবাসিক শিক্ষক দুই শিক্ষার্থীর সিটের বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। তবে ছাত্রলীগকর্মী সোহাগ সমাধানে রাজি হয়নি। এক পর্যায়ে সাংবাদিকরা বিছানা বের করার বিষয়ে হাউজ টিউটর সাজু সরদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। এসময় এক সাংবাদিক হলের সিট বাণিজ্য নিয়ে কথা বলতেই উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে যায়।

এসময় ছাত্রলীগ কর্মী সোহাগ বলেন, ‘এতোক্ষণ লিগ্যাল কথা হচ্ছিল। সিট বাণিজ্যের বিষয়টি আসলো কেন? এখন আমি এই ছাত্রকে হল থেকে নামিয়ে দেব। কে আসে আসুক। আপনি (আবাসিক শিক্ষক), প্রভোস্ট স্যার আর সাংবাদিক আসুক সমস্যা নাই।’

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ওই সিটে আমাদের ছাত্রলীগের এক কর্মী ওঠার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে অন্যজন উঠে। বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। পরে হাউজ টিউটর বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে আবাসিক হল শিক্ষক সাজু সরদার বলেন, হলের সিট নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। আমি দুই পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছিলাম। এসময় উচ্চস্বরে হয়ে সোহাগ ওই শিক্ষার্থীকে যেকোনো মূল্যে নামিয়ে দেওয়ার হুশিয়ারি দেন। আমি বিষয়টি হল প্রাধ্যক্ষকে জানিয়েছি। এছাড়া ওই শিক্ষার্থীকে রুমে থাকার নির্দেশ দিয়েছি।

সার্বিক বিষয় জানতে চাইলে মাদার বখশ্ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শামীম হোসেন বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। দুপুরে আবাসিক শিক্ষক বিষয়টি সমাধান করেছেন। আজ ছুটির দিন, তাই রবিবারে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া ঐ সিট যার নামে বরাদ্দ, তাকেই সেখানে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। অবৈধভাবে কাউকে সিটে রাখা হবে না বলে জানান তিনি।

এসএইচ-২৩/১৮/২২ (শিক্ষা ডেস্ক)