এবার ছাত্রলীগের প্রশংসায় মাতলেন শাবিপ্রবি উপাচার্য

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হাতেই ছাত্রলীগের জন্ম। শিক্ষা, শান্তি, প্রগতির আদর্শকে নিয়েই ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৬২ শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ এর ছয়দফা, ৬৯ এর গণআন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তীতে প্রত্যেকটা ধাপে ধাপে ছাত্রলীগ যে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে, এটি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করেই।’

বৃহস্পতিবার সকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২২ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটরিয়ামে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাবিপ্রবি উপাচার্য এমন মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি নিজে দেখেছি এবং আমি ওই সময়কার সাক্ষী যে, ৬৯ এর গণআন্দোলনের সময় আমাদের তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, ওই আন্দোলন যদি না হতো তাহলে বঙ্গবন্ধুকে আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি থেকে বাদ দেওয়া অসম্ভব ছিল। ওই সময় বঙ্গবন্ধু ক্যান্টনমেন্টে বন্দী ছিলেন, আইয়ুব খান তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিতেন। ছাত্রলীগের বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণেই, আন্দোলনের কারণেই পাকিস্তান সরকারের আইয়ুব খান বাধ্য হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য।’

উপাচার্য বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন ১৯৬৯ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসেন ওই সময় আমার বন্ধু রেজাউল হক মুশতাক ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিটা প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন এবং তোফায়েল আহমেদ তা ঘোষণা দিয়েছিলেন। তখন থেকেই আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাচ্ছি। ৭০ এর নির্বাচনে জয়লাভ করার পরেও বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা দিচ্ছিল না। ওই সময় মার্চ মাসে ছাত্রলীগ এগিয়ে এসেছিল। যখন স্বাধীনতার ইশতেহার প্রকাশ করা হয়েছিল ওইসময় বঙ্গবন্ধুর হাতে বাংলাদেশের পতাকাটা তুলে দিয়েছিল ছাত্রলীগ। স্বাধীনতা যুদ্ধসহ বর্তমানে ছাত্রলীগ একটি সংগ্রামের নাম, ইতিহাসের নাম, একটি আদর্শের নাম আর এই আদর্শকেই ধরে রাখার আহবান জানাবো বর্তমান ছাত্রলীগের কাছে।’

এসময় নিজ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিগত সময়ের চাইতে বর্তমান ছাত্রলীগ খুবই সুশৃঙ্খল। বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের ছাত্রলীগ সুশৃঙ্খল কর্মকান্ডের মাধ্যমে প্রশংসা কুড়িয়েছে। আগামি দিনগুলোতে যেন এর ব্যত্যয় না হয়।’

আলোচনা সভায় উদযাপন কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. এস এম সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম। এছাড়া অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন- ফিজিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদার, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক দিলারা রহমান, এপ্লাইড সায়েন্সেস এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আরিফুল ইসলাম, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. মস্তাবুর রহমান, অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর তৈমুর, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. মহিবুল আলম, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি মো. তাজিম উদ্দিন, সহায়ক কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জুয়েল মিয়া, কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. সাদেক হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা খলিলুর রহমান, সজিবুর রহমান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গবেষণা সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবদুল গনি।
এছাড়াও দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও দেশাত্মবোধক গান প্রচার, জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সাথে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শিশু কিশোরদের নিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল।

এসএইচ-৩২/১৭/২২ (শিক্ষা ডেস্ক)