লাশ হলেও হল না ছাড়ার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

রাজধানীর নিউমার্কেটে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের একটানা সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হল ও ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ টি এম মইনুল হোসেন স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

তবে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, যেকোনো মূল্যে আবাসিক হল এবং ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন তারা। প্রয়োজনে লাশ হবেন, তবুও হল-ক্যাম্পাস ছাড়বেন না শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল সোয়া ৪টায় ঢাকা কলেজের শহীদ আ. ন. ম নজিব উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে সম্মিলিতভাবে ছাত্রনেতারা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে এ ঘোষণা দেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা কলেজ অধ্যক্ষের অপসারণসহ ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনার বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন। এর আগে আবাসিক হল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

হল ও ক্যাম্পাস না ছাড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফুয়াদ হাসান বলেন, প্রয়োজনে আমরা লাশ হয়ে বের হব। তবু হল-ক্যাম্পাস ছাড়ব না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা চালানো হয়েছে এ ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষকে বলেছি, সুন্দর সমাধান করতে। তিনি যদি তা না পারেন তবে তার পদত্যাগ দাবি করছি।

এদিকে সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থীরা আবারো ঢাকা কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন। অন্যদিকে নিউমার্কেটের কাছে অবস্থান নিয়ে আছেন ব্যবসায়ীরা।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষ হয়। রাত আড়াইটার দিকে সংঘর্ষ থামে। পরে আজ সকালে আবার সংঘর্ষ শুরু হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষের কারণে রাজধানীর ব্যস্ত মিরপুর সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী আহত হন। আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও। এ ছাড়া সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সময় টিভির প্রতিবেদকসহ ৬ সাংবাদিকের ওপর হামলা করেন ব্যবসায়ীরা। শিক্ষার্থীদের আহত হওয়ার পাশাপাশি ছাত্রদের মধ্যে অনেককে হেলমেট পরে হাতে লাঠি নিয়ে সংঘর্ষে জড়াতে দেখা গেছে। ইটের আঘাতে বেশ কয়েকজন আহত হন বলে জানা গেছে।

বেলা সোয়া ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে অন্তত তিনটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

এসএইচ-৩৪/১৯/২২ (শিক্ষা ডেস্ক)