রাবিতে ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবের নবীন বরণ ও সেমিনার অনুষ্ঠিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবের নবীন বরণ এবং শিল্প উদ্যোগ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসিসি) এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবের সভাপতি জুলফিকার আলীর সভাপতিত্বে এবং নাঈমের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম। প্রধান আলোচক ছিলেন টেক্সফ্লিক্স ও আইটি বিশেষজ্ঞ নাসিম রানা মাসুদ।

এসময় অনুষ্ঠানে আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং উপদেষ্টা সাদিকুল ইসলাম সাগর, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত হোসেন, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন, ৩৮ তম বিসিএসের কাস্টমস অফিসার ইসরাফিল হোসাইন শিহাব এবং লেখক গোলাম মুরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে আইটি বিশেষজ্ঞ নাসিম রানা মাসুদ বলেন, ‘লক্ষ্য নিয়ে সবাইকে সামনে এগোতে হবে। দায়িত্ব এবং সততার মাধ্যমে নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। শিল্প উদ্যোক্তা হতে গেলে সমাজ নানাভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে। নেতিবাচক মন্তব্যকে পাশ কাটিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছাতে কাজ করে যেতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র বা ক্ষমতার কেন্দ্র ছিল পারমাণবিক বোম। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে তথ্য। এখন যে দেশের কাছে বা যার কাছে যত তথ্য আছে, সে ততো শক্তিশালী। আর এখন আমরা প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আবেগের বশবর্তী হয়ে পড়ি। আমরা ফেসবুক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ফিশিংয়ে ক্লিক করি। এতে করে আমাদের ব্যক্তিগত অনেক তথ্য পাচার হয়ে যায়, এমনকি আইডিও হ্যাক হয়। প্রযুক্তির ব্যবহারে আমাদের বিশেষ সতর্ক থাকা উচিৎ।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই মানুষ তার কর্মদক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সফল হোক। পৃথিবীর যত জ্ঞান আমরা অর্জন করি তার সবকিছুরই মূলে হলো ভাষা। ইংরেজি ভাষা যা আমাদের মাতৃভাষা নয়। কিন্তু এর মাধ্যমে অন্য ভাষাভাষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করি, মনের ভাব প্রকাশ করি। একইভাবে আইসিটি, যাকে আমরা প্রযুক্তি প্রযুক্তি করি; সেটাও আসলে একটা ভাষা। প্রযুক্তিও মূলত ভাষার মাধ্যমেই চলে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আগে দরিদ্রপীড়িত ছিলো। সেখান থেকে এখন বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো ইন্টারপ্রেনার তৈরি হয়েছে। আমাদের পারতেই হবে। এজন্য পৃথিবীর যত ভাষা আছে সেগুলো আমাদের আত্মস্থ করতে হবে। মানুষকে বলা হয় সর্বশ্রেষ্ঠ। ঠিক তেমনই চিন্তা করার ক্ষেত্রেও আমাদের শ্রেষ্ঠ হতে হবে। তা-না হলে পড়ে থাকা লোহার মতো মরিচা ধরে যাবে। তাই আমাদের নির্দিষ্ট দক্ষতাকে সময়ের উপযোগী করে তুলতে হবে।

ইতিহার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘পলাশীর যুদ্ধে পরাজয়ের পর এই অঞ্চলের স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়। এরপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এখানে এসে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে। কিন্তু তখন ধর্ম থেকে বিচ্ছুরিত হওয়ার ভয়ে মানুষ ইংরেজি থেকে দূরে ছিল। সেই সময় হিন্দুরা ইংরেজি ভাষা শিক্ষায় বেশ এগিয়ে গেছিল। এরপর বেগম রোকেয়া বিভিন্ন কুপ্রথা ভেঙে ইংরেজি শিক্ষায় মনোনিবেশ করেন। ভারতীয় উপমহাদেশে সৈয়দ আমীর আলীও ইংরেজি শিক্ষায় বেশ জোর দিয়েছিলেন। এরপর আমরা মাতৃভাষার অধিকারের জন্য জীবন দিয়েছি। কিন্তু এর পাশাপাশি বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং নিজেকে সার্বিকভাবে গড়ে তোলার জন্য ইংরেজি শেখা উচিত।’

এ সময় অনুষ্ঠানে ক্লাবের উপদেষ্টা, সদস্য এবং নবীন শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এআর-০১/২৪/১২ (নিজস্ব প্রতিবেদক)