‘সিনেমা হল বন্ধ করে দেয়া কোনো সমাধান না’

সিনেমা হল বন্ধ করে

দেশে অনেক বেশি সিঙ্গেল সিনেমা হল থাকলেই যে সব ছবি ভালো চলবে তা এখন ভাবা ঠিক হবে না। এখন হচ্ছে মাল্টিপ্লেক্সের যুগ। তাই সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে প্রত্যেক জেলায় এখন সিনেপ্লেক্স হওয়া উচিত। কারণ ফিল্মের উত্থান পতন সবসময়ই ছিল এবং থাকবে। ফিল্ম কখনো ভালো যাবে কখনোবা খারাপ।

এটাই সারা পৃথিবীর নিয়ম-বাংলাদেশের সিনেমা ও সিনেমা হল প্রসঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস।

তিনি আরো বলেন, হলিউড, বলিউড যাই বলেন পৃথিবীর কোনো দেশেই সারা বছর সুপারহিট ছবি থাকে না। হলিউড বা বলিউডে সারা বছর অসংখ্য সিনেমা নির্মাণ হলেও বছরজুড়ে তিন-চারটি ছবি আলোচনায় থাকে।

তাই সব দোষ বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকে দিলে তো হবে না। ভালো সিনেমা হলের পাশাপাশি ভালো মানের ছবি দর্শকদের উপহার দিলে অবশ্যই সিনেমার ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াবে।

দেশের বেশকিছু সিনেমা হলের বর্তমান পরিবেশ একদমই ভালো না। সেসব হলের ফ্যান নষ্ট, সিট ভালো না। এমন অভিযোগ প্রায়ই আসতে থাকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফেরদৌস বলেন, এই ধরনের সিনেমা হলগুলোর পরিবেশ আগে ঠিক করা প্রয়োজন। এসব সিনেমা হলে শাহরুখ খানের ছবি চললেও ব্যবসা করবে না। কারণ এমন পরিবেশে এত কষ্ট করে মানুষ মনোযোগ দিয়ে একটা সিনেমা দেখতে পারে না। দেখতে চাইছেও না এখন।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি আগামী ১২ই এপ্রিল থেকে দেশের সব সিনেমা হল বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

এ বিষয়টি নিয়ে ফেরদৌস বলেন, সাফটা চুক্তির আওতায় কলকাতার দেব, জিৎসহ অনেক তারকার ছবি এখানে মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু সেই ছবিগুলো তো ব্যবসা করেনি। এর চেয়ে যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত কিছু ছবি বাংলাদেশে ঠিকই ব্যবসা করেছিল। কারণ, বাংলাদেশের শিল্পীরা সেসব ছবিতে অভিনয় করেছিল। দর্শকরা আমাদের দেশের শিল্পীদের ছবি দেখতে চায়। তাই আমাদের এখানে আরো বেশি যৌথ প্রযোজনার ছবি হওয়া উচিত। ওপারের শিল্পীরা এখানে এসে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পছন্দ করে। এই তো কয়েকদিন আগে কলকাতার শ্রাবন্তী এসেছিল। তার সঙ্গে আমার কথা হলো।

সে বললো, এখানকার ছবিতে বা এখানকার শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করে তার ভীষণ ভালো লেগেছে। সামনে আরো কাজ করতে চেয়েছে শ্রাবন্তী। তাই ইন্ডাস্ট্রির উন্নতির স্বার্থে যা যা করা দরকার সেটাই এখন করা উচিত। সিনেমা হল বন্ধ করে দেয়া কোনো সমাধান না। এদিকে ছবি নির্মাণের পাশাপাশি ছবির প্রচারণায়ও সময় দিতে হবে বলে মনে করেন ফেরদৌস।

তিনি বলেন, একটি ছবি শুধুমাত্র পোস্টার, ব্যানার দিয়ে প্রচারণার দিন শেষ। এখন পোস্টার, ব্যানারের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সকল জায়গায় প্রচারণা করতে হবে। দর্শকদের ছবি দেখার জন্য আগ্রহী করতে হবে। বর্তমানে ফেরদৌস নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূলের ‘গাঙচিল’ ছবির কাজ করছেন। বর্তমানে এ ছবির কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ আছে।

কারণ হিসেবে ফেরদৌস বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপন্যাস ‘গাঙচিল’ থেকে চিত্রনাট্য করে ছবিটি নির্মাণ হচ্ছে। এখন তো কাদের ভাই অসুস্থ। তাই কাজটি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। হয়তো কিছুদিন পর বাকি কাজ শুরু হবে। এ ছবিতে ফেরদৌসের বিপরীতে পূর্ণিমা অভিনয় করছেন।

এটির বাইরে ফেরদৌস সম্প্রতি ‘গন্তব্য’ ও ‘বিউটি সার্কাস’ নামে দুটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ছবি দুটি সামনে মুক্তি পাবে বলে জানান তিনি।

‘হঠাৎ বৃষ্টি’, ‘সন্তান যখন শত্রু’, ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’, ‘সবার উপরে প্রেম’, ‘বউ শাশুড়ির যুদ্ধ’, ‘মেহের নেগার’, ‘নন্দিত নরকে’, ‘খায়রুন সুন্দরী’, ‘রানীকুঠির বাকি ইতিহাস’-এর মতো জনপ্রিয় ছবির নায়ক ফেরদৌস বলেন, ‘গন্তব্য’ ও ‘বিউটি সার্কাস’ ছবি দুটির গল্প ভিন্ন ধরনের। দর্শকরা ছবিটি দেখে হতাশ হবেন না।

অন্যদিকে ফেরদৌস ‘সেভ লাইফ’ ও ‘কাঠগড়ায় শরৎচন্দ্র’ নামে দুটি ছবির বাকি কাজ সামনে শুরু করবেন বলে জানান।

আরএম-২২/১৯/০৩ (বিনোদন ডেস্ক, তথ্যসূত্র: মানবজমিন)