পরীমনির মামলার আসামি নাসির গুলশান ক্লাবেরও সদস্য

চিত্রনায়িকা পরীমনিকে বোট ক্লাবে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলায় গ্রেপ্তার উত্তরা ক্লাবের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদ গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবেরও সদস্য। নাসির গ্রেপ্তার হওয়ার দুদিন পর বুধবার অল কমিউনিটি ক্লাবের সভাপতি কে এম আলমগীর ইকবাল অভিযোগ করেন, গত ৭ জুন মধ্যরাতে পরীমনি ও তার সঙ্গীরা গুলশানে তার ক্লাবে গিয়ে ‘হাঙ্গামা’ বাঁধিয়েছিলেন।

এরপর বনানীতে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের সামনে এসে পরীমনি দাবি করেন, মূল ঘটনা থেকে নজর সরাতে ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে’ তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে। রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে তার আলাপে অল কমিউনিটি ক্লাবের সঙ্গে নাসির উদ্দিন মাহমুদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিও আলোচনায় আসে। পরীমনির মামলায় গ্রেপ্তার আবাসন ব্যবসায়ী নাসির ইতোমধ্যে ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যপদ খুইয়েছেন।

এ বিষয়ে অল কমিউনিটি ক্লাবের সভাপতি কে এম আলমগীর ইকবাল আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘নাসির উদ্দিন মাহমুদ উত্তরা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আমাদের ক্লাবেরও উনি সদস্য, কিন্তু উনি কখনো আসেন না। এখনও সদস্যপদে আছেন।’

পরীমনি যে অভিযোগ তুলেছেন, নাসির গ্রেপ্তার হওয়ায় এখন তার পক্ষ নিয়ে এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে কি না-এমন প্রশ্নের উত্তরে ব্যবসায়ী আলমগীর বলেন, “এ রকম হওয়ার তো কোনো দরকার নাই। আমরা উনার (পরীমনি) ব্যাপারে কথা বলতেও রাজি না। আপনারা জানতে চেয়েছেন- কী ঘটেছিল? সেই জায়গা থেকে ব্যাখ্যা করেছি। আমাদের আর কিছু করার দরকারও নাই।’

বুধববার রাতে পরীমনির অভিযোগ টিভিতে দেখার কথা জানিয়ে আলমগীর বলেন, ‘আমি রাতে নিউজ দেখতেছিলাম। তখন উনি যে মন্তব্য করেছে, সেটাও আমি শুনেছি। আবার আরেক ভদ্রলোক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও (বিএনপি মহাসচিব) এমন কথা বলেছেন। আমরা আরও তিন-চার জন ছিলাম। বিষয়টি নিয়ে হাসাহাসি করলাম। কোন জায়গার জিনিস কোন জায়গায় গেছে!’

তিনি বলেন, ‘পরীমনির বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেওয়ার কোনো ইচ্ছাই আমাদের নাই। এমন কিছু তো করেন নাই উনি। কয়েকটা প্লেট ভেঙেছেন, সেটা যেই মেম্বারের অতিথি হয়ে গিয়েছিলেন সেই মেম্বারই দিতে পারতেন। ক্লাবের মেম্বারের সঙ্গে যারা ক্লাবে আসেন তারা শুধু মেম্বারেরই নন, ক্লাবেরও অতিথি। পরীমনি আর ফখরুল সাহেব যাই বলুক, আমরা এগুলো শুনতেও চাই না।’

প্রসঙ্গত, গত ৭ জুন মধ্যরাতে গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে যাওয়ার কথা পরীমনি স্বীকার করেছেন। সিসি টিভির ফুটেজে পরীমনির সঙ্গে তার সাবেক বাগদত্তা সাংবাদিক তামিম হাসান ও কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ করিম জিমি ও আরেক নারীকে সে রাতে ক্লাবে ঢুকতে দেখা যায়।

তবে হাঙ্গামার অভিযোগ অস্বীকার করে পরীমনি সাংবাদিকদের সামনে প্রশ্ন রেখেছেন- সেদিন ক্লাবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে তা আটদিন পর কেন প্রকাশ করা হলো?

এ বিষয়ে আলমগীরের ভাষ্য, ‘আমরা তো কোনো ভিডিও করিনি। কিছুই করিনি। উনি ট্রিপল নাইনে কল করে পুলিশ এনেছিলেন, পুলিশ সম্ভবত অনর্থক আনার জন্য নিজেরাই জিডি করেছে। বিষয়টি আমরা জানিই না। কালকেও সাংবাদিকরা এসেছিলেন, আমরা তো এটাও করিনি। সাংবাদিকরা জানতে চাইছে বলে জানিয়ে দিলাম।’

ক্লাব কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে পরীমনির বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, সে রকম কোনো ইচ্ছা কিংবা পরিকল্পনা তাদের নেই।

এসএইচ-১১/১৭/২১ (বিনোদন ডেস্ক)