তালেবান শাসনে ভীত-সন্ত্রস্ত আফগানিস্তান। সেখানে মহিলা ও শিশু সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। ২০ বছর পর ফের কাবুলিওয়ালাদের দেশে ক্ষমতা কায়েম করার পথে তালেবান। আফগানদের দুরবস্থা দেখে শিউরে উঠছে বিশ্ববাসী। ইতোমধ্যে বহু তারকা আফগান মহিলাদের জন্য দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন। এই তালিকায় এবার যুক্ত হলেন অভিনেত্রী মাহিকা শর্মা । তবে তার বক্তব্য শুনে ট্রোল শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
মাহিকার দাবি, তিনি রাখি বেঁধে তালিবান সদস্যদের শেখাবেন কীভাবে মহিলাদের সম্মান করতে হয়। রোববার টুইটে তিনি লেখেন, ‘তালেবান সদস্যরা কখনো নিজেদের মা বা বোনের থেকে ভালবাসা পায়নি। সেই কারণেই তারা সন্ত্রাসবাদী হয়ে উঠেছে। যুদ্ধ বা শাস্তি দিয়ে তাদের পরিবর্তন করা যাবে না। আমি রাখি বেঁধে তাদের বোন হয়ে যাব। তারপর তাদের শেখাব কীভাবে মহিলাদের সম্মান করতে হয়। আমার মতে, এভাবেই আফগানদের তালেবানের হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভালোবাসাই মানুষকে বদলাতে পারে। ইতিহাসেও দেখেছি কীভাবে আমাদের বোনেরা কত ডাকাতকে ভালো মানুষে পরিণত করেছে। আমার আফগান নারীদের জন্য চিন্তা হচ্ছে আর আমি ওদের জন্য সরব হচ্ছি, ওদের গণতন্ত্রের জন্য। আফগান মানুষের জন্য সবার এক হওয়া উচিত আর তালেবানের হাত থেকে বাাঁচানো উচিত।’
এদিকে আফগান নারীদের অধিকার প্রসঙ্গে তালেবানের কালচারাল কমিশনের প্রধান আব্দুল কাহার বালখি বলেন, নারীদের অধিকার নিয়ে আমরা আলোচনা করছি, কীভাবে আমরা একটি ভালো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারি সে বিষয়ে আরো আলোচনা হচ্ছে। ইসলামী আইনে সবার অধিকার রয়েছে। এমনকি শিশুদেরও অধিকার রয়েছে। এছাড়া ইসলামি আইনে নারী অধিকার নিয়ে কোনো অস্পষ্টতা নেই। আমরা সবচেয়ে ভাল অধিকার সংরক্ষণ করতে পারবো।
এরই মধ্যে আব্দুল কাহার বালখি আন্তুর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরাকে তালেবানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সাক্ষাতকার দিয়েছেন।
আফগানিস্তানে তালেবানের সরকার গঠন নিয়ে আল জাজিরার এক প্রশ্নের জবাবে বালখি বলেন, নতুন সরকার গঠনে কাজ চলছে এবং অবশ্যই আমরা ভালো একটা সিস্টেমের মধ্যে কাজ করতে পারবো। তবে দেশের রাজধানী কাবুল থেকে কান্দাহারে স্থানান্তর করা হবে কিনা সেটি নিয়ে আলোচনা চলছে। কারণ কান্দাহার তালেবানের জন্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কান্দাহারেই তালেবান গোষ্ঠীর সূচনা হয়।
কাবুল বিমানবন্দরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছি। বিমান বন্দরের ভেতরের পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করছে, বিমানবন্দরের বাইরে চেকপোস্ট আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তালেবান কাবুল দখলের পর আফগান নাগরিকদের দেশ ছাড়ার প্রসঙ্গে বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য কিছু নাগরিক দেশ ছাড়তে বিমানবন্দরে ভিড় করছেন। আমরা সবার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছি। তবে ভয়, আতঙ্ক এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব তাদের মধ্যে রয়েছে। তবে আমরা কাউকে ক্ষতি করবো না।
তালেবানকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বলা হয় বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বালখি বলেন, আমি মনে করি না আফগান জনগণ আমাদের সন্ত্রাসী মনে করে। এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমাদের ব্যবহার করা শব্দ। তাদের তথাকথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ নাম দিয়ে এটি ব্যবহার করা হতো।
এসএইচ-১০/২৩/২১ (বিনোদন ডেস্ক)