আরিয়ানের সঙ্গে গ্রেফতার কে এই মুনমুন?

মাদককাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন শাহরুখপুত্র আরিয়ান খান। ১৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গ্রেফতার করেছে ভারতের মাদকবিরোধী সংস্থা (এনসিবি)। এদিকে আরিয়ানের সাথে আলোচিত হচ্ছে আরো একটি নাম। পার্টিতে গিয়ে মাদকসহ আরিয়ানের সাথেই ধরাশায়ী হয়েছেন মুনমুন ধমেচা।

কিন্তু কে এই মুনমুন? তার স্যানিটারি প্যাডে আরিয়ান লুকিয়ে রেখেছিল মাদক। শাহরুখ-তনয়ের সঙ্গে তার ‘গাঢ় বন্ধুত্ব’ নিয়ে ফিসফাস শুরু ইতিমধ্যেই।

জানা গেছে, মধ্য প্রদেশের এক ব্যবসায়ী পরিবারের মেয়ে মুনমুন। পেশায় মডেল। পেশার সূত্রেই বলিউড তারকাদের সঙ্গেও তার ওঠাবসা।

ইনস্টাগ্রামেও বেশ জনপ্রিয় মুনমুন। সেখানে তার অনুগামীর সংখ্যা দশ হাজারেরও কিছু বেশি। ২০১৪ সাল থেকে এই অ্যাপটি তিনি ব্যবহার করছেন। এখনও পর্যন্ত তাঁর পোস্টের সংখ্যা ১৩৪। তবে সেগুলোর মধ্যে কোনও ছবিতেই শাহরুখ-পুত্রের সঙ্গে দেখা যায়নি তাকে।

এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, যে কোনো সময় অভিযান পরিচালনা করা হতে পারে শাহরুখ খানের বাংলো ‘মান্নাত’-এ।। অভিযান চালানোর জন্য গঠন করা হয়েছে বিশেষ টিম।

শাহরুখ পুত্র আরিয়ানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আরবাজ মার্চেন্ট কোথা থেকে মাদক পেতেন তার সন্ধানও পেয়ে গেছে এনসিবি। এখনো বিভিন্ন স্থানে এনসিবির অভিযান চলছে। আরো অনেকে গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কা আছে বলেও জানা গেছে।

শনিবার গ্রেফতার হওয়া আরিয়ান খান জানিয়েছেন গত ৪ বছর তিনি নিয়মিত মাদক সেবন করেন। গ্রেফতার হওয়ার পর সোমবার বাবার সঙ্গে ২ মিনিট কথা বলার সুযোগ পান আরিয়ান। এ সময় বাবাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। মাদককাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর এটাই ছিল পিতা-পুত্রের প্রথম দেখা।

শাহরুখের ছেলেকে ‘নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস’ (এনডিপিএস)-আইনের আওতায় গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারি পরোয়ানায় লেখা রয়েছে, ৩০ গ্রাম কোকেন, ২১ গ্রাম চরস, ২২টি এমডিএমএ বড়ি এবং নগদ ১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে মুম্বাই থেকে গোয়াগামী প্রমোদতরীর টার্মিনালে।

শনিবার রাতে মুম্বাইয়ের কর্ডেলিয়া নামে একটি প্রমোদতরীতে এক পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন আরিয়ান। সেখান থেকে তাকে আটক করে মাদকবিরোধী সংস্থা এনসিবি। এদিন রাত থেকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় আরিয়ানকে। ১৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশেষে প্রমোদতরীতে মাদক নেওয়ার কথা স্বীকার করেন আরিয়ান।

আরিয়ান অনুশোচনা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, মাদক সেবন করে তিনি ভুল করেছেন। এর আগে কখনো এমন কিছু করেননি তিনি। ইতোমধ্যেই ছেলের জন্য বিখ্যাত আইনজীবী সতীশ মানশিণ্ডেকে নিয়োগ করেছেন শাহরুখ। সতীশের প্রতিনিধিরা এনসিবির দফতরে পৌঁছে গিয়েছেন।

এনসিবি সূত্রে জানা যাচ্ছে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে শাহরুখপুত্রের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট। তিনি কাদের সঙ্গে কথা বলতেন, যোগাযোগ রাখতেন— এসব কিছুই এখন আতশকাচের নিচে। কোনো মাদকচক্রের সঙ্গে তিনি যুক্ত কি না, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে। বন্ধুদের বিভিন্ন গ্রুপে কী ধরনের আলোচনা করতেন তিনি, তা-ও এখন নজরে তদন্তকারীদের। বেশ কয়েক ঘণ্টা জেরার মধ্যেই আরিয়ান স্বীকার করে নেন, তিনি মাদক নিয়েছেন।

এনসিবির বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানায়, শনিবার রাতে মুম্বাই থেকে গোয়ার উদ্দেশে একটি বিলাসবহুল ক্রুজ যাত্রা করে। যাত্রীর ছদ্মবেশে কর্ডেলিয়া নামে বিলাসবহুল ওই ক্রুজে যাত্রা করেন তারাও। ক্রুজ মুম্বাই থেকে ছাড়ার কিছুক্ষণের মাঝেই শুরু হয় পার্টি।

এনসিবির কাছে খবর ছিল, মাঝ সমুদ্রে কর্ডেলিয়াতে পার্টি হবে এবং সেখানে মাদক সেবন করা হবে। পার্টির মাঝপথে অনেকেই যখন মাদক সেবনে টালমাটাল অবস্থা ঠিক সেই অবস্থাতেই হাতেনাতে ধরে ফেলেন এনসিবির সদস্যরা।

বাজেয়াপ্ত হয় প্রচুর টাকার নিষিদ্ধ মাদক। তার মধ্যে কোকেন, হাশিশ, এমডিএমএর মতো মাদকও রয়েছে। অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে আটক করেন এনসিবির সদস্যরা।

আটক হওয়া সেই ১০ জনের মধ্যেই ছিলেন শাহরুখপুত্র আরিয়ান খান। শুধু বলিউড নয়, ফ্যাশন জগতের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন সেখানে।

গত বছর ভারতীয় সুপারস্টার সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসে তারকামহলে মাদক সেবনের কাহিনী। বাদ ছিলেন না সুশান্তও। এরপরেই মাদককাণ্ডে উঠে আসতে থাকে একের পর এক নাম। জেরার মুখে পড়তে হয় দীপিকা পাড়ুকোন, শ্রদ্ধা কাপুর, রাকুলপ্রীতসহ আরো খ্যাতিমান তারকাদের। সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে এনসিবি যথেষ্ট তৎপর তাদের কাজের প্রতি।ৎ

এসএইচ-১২/০৪/২১ (বিনোদন ডেস্ক)