ফারাজের গল্প টি ভুল

গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনা নিয়ে বলিউডে নির্মিত ‘ফারাজ’ সিনেমায় গল্পকে ‘ভুলভাবে’ উপস্থাপন করা হয়েছে। এই সিনেমাটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি না দেওয়ার বিষয়ে দাবি তুলেছেন সেদিনের হামলায় নিহত অবিন্তা কবীরের মা রুবা আহমেদ।

বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি তুলে রুবা আহমেদ বলেন, ‘এই সিনেমাতে অবিন্তা হয়েছে আয়েশা, তারিশ হয়েছে তারি ইভেন আমি আছি মুভিটাতে।

আমি হচ্ছে রাবেয়া, তারিশের বাবা আছে মুভিটাতে তাঁর একটা নাম দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই না, আমার মেয়ের ছবিও দেখানো হয়েছে মুভিতে। তাইলে আমার মেয়ের প্রাইভেসি কোথায় থাকল, আমার প্রাইভেসি কোথায় থাকল।’

রুবা আহমেদ আরও বলেন, ‘এই মুভিতে আমার মেয়ের জন্য আরেকজন জীবন দিয়ে দিয়েছে, সে হিরো। নো, দ্যাটস রং। আমি এটা বিশ্বাস করি না। কারণ এটার কোনো প্রমাণ নাই। ওখান থেকে কেউ ফিরে আসেনি। যারা বেঁচে এসেছে তারা কেউ কিচ্ছু জানে না, বলতে পারে না। এখানে কোনো ইভিডেন্স নাই যে কেউ হিরো হয়েছে। যদি হিরো হয়ে থাকে তাহলে ২২টা মানুষ যে চলে গেছে (মারা যাওয়া) তাঁরা হিরো। আমরা কেউ না। সো কাউকে এককভাবে হিরো বানানোটা আপনারা যদি আমাকে বলেন, আমি সেটা বিশ্বাস করি না। ইটস আ রং, রং স্টেটমেন্ট। এটা হতে পারে না। এই মুভিটা রং, এটা কোনো দিনই হতে পারে না।’

অবিন্তার মা আরও বলেন, ‘অবিন্তা কবীর, তারিশ এবং ফারাজ হোসাইন আরও বাকি অন্যান্যদের সঙ্গে এই তিনজন দুনিয়া থেকে চলে গেছে। আমি মনে করি এটাই যথেষ্ট, এটা নিয়ে সিনেমা বানানোর কোনো মানে দেখি না। আর মুভির নামটা ফারাজ হয়েছে তার কারণটা হলো, এখানে ডেফিনেটলি একটা ক্যারেক্টারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সেই ক্যারেক্টারে জোর দিতে গিয়ে, আমার মেয়ের কথা চলে আসছে। আমরা কেউ জানি না সেদিন ওরা কিসের মধ্যে দিয়ে গেছে। কেউ আমরা জানি না, কোনো দিন জানতেও পারব না। সো আমরা একটা গল্প বানালাম। সেই গল্প বানিয়ে মুভিটা তৈরি করলাম। কিন্তু এই মুভির সঙ্গে যে পরিবারগুলো আছে, সেই পরিবারগুলোর কাছে থেকে তো কনসেন্ট নিতে হবে।’

ফারাজ সিনেমাটি যেন মুক্তি না দেওয়া হয় সে জন্য দীর্ঘ সময় আইনি লড়াই চালিয়েছেন অবিন্তার মা। সেটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি ছয় মাস মুভিটাকে আটকে রেখেছি এটা না হলে ছয় মাস আগেই মুভিটা মুক্তি পেয়ে যেত। আমার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। প্লিজ আপনারা এই মুভিটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মের রিলিজ হতে দিবেন না। আমি জানি এই মুভিটা রিলিজ পেয়ে যাবে। এর মধ্য দিয়ে আমার মেয়ের ভাবমূর্তি যেমন নষ্ট হচ্ছে সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তিও নষ্ট হচ্ছে। তারপরও আপনাদের কাছে অনুরোধ এই মুভিটা দেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্মে যেন রিলিজ না হয়।’

২০১৯ সালে এই সিনেমার সম্পর্কে প্রথম জানতে পারে অবিন্তার পরিবার। এর প্রথম পোস্টার ২০২১ সালের ৫ আগস্ট তাদের হাতে আসে। এই ছবি বন্ধের জন্য অবিন্তার মা নির্মাতাদের কাছে উকিল নোটিশ পর্যন্ত পাঠান।

এসএ-১৯/০১/২৩ (বিনোদন ডেস্ক)