পপসম্রাট আজম খাঁন হারিয়ে যাবার এক যুগ

বাংলার পপ সংগীতের কিংবদন্তি বলা হয় সংগীতশিল্পী আজম খানকে। পুরো নাম মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান হলেও সংগীতাঙ্গনে তিনি আজম খান নামেই পরিচিত। মাত্র ২১ বছর বয়সে ঢাকা উত্তরের সেকশন কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন বিখ্যাত এই পপ তারকা।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর গান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আখন্দ ভ্রাতৃদ্বয় আরও কয়েকজনকে নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ব্যান্ডদল ‘উচ্চারণ’। ১৯৭২ সালে ‘এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ এবং ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় বাংলাদেশ টেলিভিশন অর্থাৎ বিটিভিতে। মুহূর্তেই গান দুটি দেশজুড়ে পরিচিতি পেয়ে যায়। প্রশংসা আর তুমুল জনপ্রিয়তায় ভাসতে থাকে ব্যান্ডদল ‘উচ্চারণ’

জানা যায়, ১৯৭২ সালে নটরডেম কলেজ প্রাঙ্গণে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো দর্শকের সামনে গান করেন আজম খান। ১৯৭৩ সালের ১ এপ্রিল এ দেশে প্রথম কনসার্ট হয় ওয়াপদা মিলনায়তনে হারুন নামে জনৈক ব্যক্তির অবদানে। ১৯৮২ সালে ‘এক যুগ’ নামে তার প্রথম ক্যাসেট বের হয়। এরপর তার বেশ কিছু ক্যাসেট এবং সিডি বাজারজাত হয়। তার প্রথম সিডি বের হয় ১৯৯৯ সালের ৩ মে ডিস্কো রেকর্ডিংয়ের প্রযোজনায়।

আজম খান ১৯৭৪-১৯৭৫ সালের দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’ শিরোনামে গান গেয়ে হইচই ফেলে দেন দেশব্যাপী। ১৯৮১ সালের ১৪ জানুয়ারি সাহেদা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় আজম খানের। তখন তার বয়স ছিল ৩১ বছর। সহধর্মিণী মারা যাওয়ার পর থেকে একাকী জীবন কাটাতেন তিনি। বাংলাদেশের এই রক গানের জনকের কিংবা গুরুর জন্ম ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আজিমপুর সরকারি কলোনির ১০ নম্বর কোয়ার্টারে।

আজম খানের ১৭টি গানের অ্যালবামসহ বেশ কিছু মিক্সড অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। জনপ্রিয় এই পপ তারকার অসংখ্য জনপ্রিয় গানের মাঝে উল্লেখযোগ্য কিছু গান হলো: আমি যারে চাইরে, অভিমানী তুমি কোথায়, একদিন-তো চলে যাব, জীবনে কিছু পাব নারে, আসি আসি বলে তুমি আর এলে না, ও চাঁদ সুন্দর চাঁদ, চুপ চুপ অনামিকা চুপ, হারিয়ে গেছ খুঁজে পাব না, ঘুম আসে না-সহ আরও অসংখ্য খান।

২০১০ সালে তিনি ক্যানসার আক্রান্ত হন। ২০১১ সালের ৫ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান জনপ্রিয় এই পপসম্রাট। তবু আজও রয়ে গেছেন ভক্তদের ভালোবাসায়। আছেন তাদের অন্তরেই।

এসএইচ-০৩/০৫/২৩ (বিনোদন ডেস্ক)