প্রেমিকের মৃত্যু হলেও ফাঁস ছিঁড়ে রক্ষা পেল প্রেমিকা

যুগলের আত্মহত্যার চেষ্টা। শরীরের ভারে গামছার ফঁাস ছিঁড়ে পড়ায় প্রাণে বেঁচেছে নাবালিকা প্রেমিকা। তবে বেঁচে নেই তার বিবাহিত তরুণ প্রেমিক। মঙ্গলবার ভোরে নিউ দিঘার দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ডিপো সংলগ্ন একটি হোটেলের এই ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত প্রেমিকের নাম দীপ নায়েক (২২)। বাড়ি হাওড়ার বাগনান থানার মামুরচিতে। আর তঁার ১৭ বছরের নাবালিকা প্রেমিকার বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে। সে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী বলে জানিয়েছে পুলিশ। ছত্তিশগড়ের একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করতেন দীপ। ২ বছর আগে ফেসবুকেই আলাপ হয় তাঁদের।

কাঁথির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, ‘‌এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য মৃতের নাবালিকা প্রেমিকা এবং হোটেলের মালিক–কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে‌।’‌ এদিন ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ হোটেলের ঘরে ভারী কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দে ছুটে আসেন কর্মচারীরা। দরজা–জানালা বন্ধ ঘরে কী ঘটেছে জানার কোনও উপায় নেই বুঝে দরজা ভাঙেন তাঁরা। ততক্ষণে অবশ্য দেহে প্রাণ ছিল না দীপের।

তবুও হোটেল কর্মীরা দ্রুত গাড়ি ডেকে দীপ আর ওই নাবালিকাকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড় লাগান। হাসপাতালে মৃত বলে জানানো হয় দীপকে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় নাবালিকাকে। এরপরই তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দিঘা মোহনা কোস্টাল থানার পুলিশ। সেই সঙ্গে জেরার মুখে পড়েছেন নিউ দিঘার ওই হোটেলের মালিক এবং এক কর্মচারী। হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পরিচয় যাচাই না করে যুগলকে ঘর ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

১ ফেব্রুয়ারি গ্রাম্য সালিশিতে এক অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর সঙ্গে প্রায় জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল দীপের। মাতব্বররা তরুণীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার দায় নাকি জোর করে চাপিয়ে দিয়েছিল দীপের ঘাড়ে। ওই নাবালিকা পুলিশকে জানিয়েছে, এই মিথ্যা অপবাদের জন্যই নাকি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন দীপ। আর তাই মরতে চান বলে জানিয়েছিলেন।

দীপের সঙ্গে স্বেচ্ছামৃত্যুতে সায় দেয় নাবালিকাও। ২ ফেব্রুয়ারি দিঘায় আসেন তাঁরা। ওইদিন অন্য একটি হোটেলে উঠেছিলেন। ৩ ফেব্রুয়ারি নিউ দিঘার ওই হোটেলে ওঠেন। তারপরই এই ঘটনা।

দিঘা মোহনা থানার পুলিশ জানিয়েছে, আত্মহত্যার আগে গলায় যুগলের ফাঁস লাগানোর প্রতীকী ছবি তাঁরা পোস্ট করেন ফেসবুকের দেওয়ালে। কাঁচা ইংরেজিতে লেখেন, তাঁদের প্রেমবঞ্চনার কথা। এরপরই সিলিং ফ্যানে গামছার ফাঁসে গলা দেন তাঁরা।

এসএইচ-০২/০৬/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)