হতাশ যুবক বিয়ে করলেন রোবটকে

হতাশ যুবক বিয়ে

জেং-এর পরিকল্পনা রয়েছে যে, নিজের ‘ঘরনি’কে তিনি গৃহকর্মে নিপুণা করে গ়ড়ে তুলবেন। বাড়ির কাজকর্ম করবে ইংইং-ই। তাকে হাঁটাচলা করতেও শেখাবেন।

চিনের এক আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইঞ্জিনিয়ার প্রেমের অন্বেষণে ক্লান্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত এক রোবটকে বিয়ে করেছেন। রোবটটি তাঁর নিজেরই তৈরি করা।

৩১ বছর বয়সি জেং জিয়াজিয়া কোনও উপযুক্ত মানব-পত্নী খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এ দিকে বিয়ের জন্য জেং-এর উপর তাঁর বাবা-মা-র চাপও বাড়ছিল। শেষে হতাশ হয়ে জেং একটি রোবট তৈরি করে ফেলেন। তার নাম দেন ‘ইংইং’। তার পরে সেই রোবটটিকেই বিয়ে করে ফেলেন। অন্তত এমনটাই দাবি কিয়াংজিয়াং ইভনিং নিউজে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের।

বিয়ের আগে পুরোদস্তুর প্রণয়পর্বও নাকি চলেছিল দু’জনের। মাস দু’য়েক ইংইং-এর সঙ্গে ‘ডেট’ করেছিলেন জেং। তার পর এপ্রিল মাসের গোড়ার দিকে পূর্ব চায়নার শহর হাংজোউ-তে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে ইংইং-কে বিয়ে করেন জেং।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেং-এর মা এবং বন্ধুবান্ধবরা। প্রচলিত চাইনিজ রীতি মেনেই বিবাহানুষ্ঠান পালিত হয়। স্থানীয় প্রথার অনুসরণে বিয়ের সময়ে ‘কনে’ ইংইং-এর মাথা ঢেকে দেওয়া হয়েছিল লাল কাপড়ে।

আপাতত ইংইং কিছু চাইনিজ শব্দ পড়তে পারে এবং কিছু ছবি দেখে চিনতে পারে। অল্পসল্প কথা বলতেও সে সক্ষম। তবে জেং-এর পরিকল্পনা রয়েছে যে, নিজের ‘ঘরনি’-কে তিনি গৃহকর্মে নিপুণা করে গ়ড়ে তুলবেন। বাড়ির কাজকর্ম করবে ইংইং-ই। তাকে হাঁটাচলা করতেও শেখাবেন। তার আগে পর্যন্ত ৩০ কেজি ওজনের ‘বউ’টিকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে গেলে ঘাড়ে করেই নিয়ে যেতে হবে জেং-কে।

এই অভিনব বিয়ের খবরটি প্রচার হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে চাইনিজ সোশ্যাল মিডিয়াগুলিতে। কেউ বলছেন, সবটাই পাবলিসিটি স্টান্ট। অনেকে আবার ঠাট্টা করছেন জেং-এর এই পদক্ষেপ নিয়ে। কেউ বলছেন, ‘ভালোই হল, শাশুড়ির গঞ্জনাও সইতে হবে না, আর নতুন বাড়ি-গাড়ির জন্য বউয়ের আবদারও সহ্য করতে হবে না।’ কেউ কেউ আবার জেং-কে সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, ‘আপনি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বুড়ো হবেন। কিন্তু আপনার স্ত্রী তো চিরতরুণী। বার্ধক্যে দাম্পত্যজীবন সামলাবেন কী ভাবে?’

অনেকে অবশ্য ঠাট্টার উর্ধ্বে গোটা ঘটনাটায় একটা নির্মম সমাজসত্যের প্রতিফলন দেখছেন। চিনে পুরুষদের তুলনায় নারীর সংখ্যা অত্যন্ত কমে গিয়েছে। কন্যাভ্রূণ হত্যাই এর জন্য মূলত দায়ী। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চিনে প্রতি ১০০ জন মহিলায় পুরুষের সংখ্যা বর্তমানে ১১৩.৫। ফলে অনেক পুরুষকেই অবিবাহিত থেকে যেতে হচ্ছে। জেং তেমনই এক জন ভুক্তভোগী।

অন্য দিকে গোটা ঘটনায় ফুটে উঠছে যন্ত্রসভ্যতার আগ্রাসনের ছবিও। চিনের অনেক রেস্তোঁরাতেই বর্তমানে মানব-ওয়েটারের বদলে রোবটকে রাখা হচ্ছে ওয়েটার হিসেবে। এ বারে পত্নীর আসনও ছিনিয়ে নিল যন্ত্রমানবী।

আরএম-০৫/০৭/০২ (অনলাইন ডেস্ক)