ছবিই ৪১ বছর পর মায়ের সঙ্গে দেখা করাল ছেলের

একটা সাদাকালো ছবিই ৪১ বছর পর জন্মদাত্রীর সঙ্গে দেখা করাল ছেলের। তন্নতন্ন করে খোঁজার পর ভারতে এসেই নিজের মা’কে খুঁজে পেলেন ৪১ বছরের ডেভিড নিয়েলসন। ৪১ বছর ধরে অপেক্ষা করেছেন। অবশেষে মাকে খুঁজে পেলেন হিমাচল প্রদেশের মানালিতে। সেখানেই টালির বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে থাকতেন ৬৮ বছর বয়সের ধনলক্ষ্মী।

মায়ের অজান্তেই ডেভিডকে দত্তক নিয়েছিলেন এক ডানিশ পরিবার। যে চাইল্ড হোমে ডেভিড থাকতেন, সেখান থেকেই ওই ডানিশ পরিবার তাকে নিয়ে যান। তখন ডেভিডের বয়স ছিল মাত্র দুই বছর।

কিন্তু কী ভাবে নিজের জন্মদাত্রীকে খুঁজে পাবেন ডেভিড? সম্বল বলতে একটা সেই ছোট্ট বেলার সাদাকালো ছবি। সেই ছবির বদৌলতেই নিজের মা’কে শেষমেশ খুঁজে পেল ডেভিড। সেই ছবিতে রয়েছে ছোট্ট ডেভিড আর তার মা। যে চাইল্ড হোমে ডেভিড থাকতেন, সেখান থেকেই মিলেছিল এই ছবি। পাল্লাভারামের সেই চাইল্ড হোম বন্ধও হয়ে যায় ১৯৯০ সালে।

ডেভিড নিয়েলসনের কথায়, ‘এটা আমার জন্য খুবই আবেগপ্রবণ মুহূর্ত একটা।’ নানান প্রান্তের বন্ধুরা থেকে শুরু করে, কৌসুলিরা, অঞ্জলি পাওয়ার এবং অরুণ ধোলের মত সমাজসেবীরাই শেষমেশ ডেভিডকে পথ দেখিয়ে তার মায়ের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেয়।

গত মাসেই ডেনমার্কের কোপেনহাগেন থেকে ভিডিও কলের মাধ্যমে মায়ের সঙ্গে কথা বলেন ডেভিড। আর তখনই তিনি জানতে পারেন যে, লোকের বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে দিন কাটে তার মায়ের। আর সেই ভিডিও কলে ডেভিড এ-ও জানতে পারেন যে, সারাবানন নামে তাঁর একটি ছোট্ট ভাইও রয়েছে।

চেন্নাই কর্পোরেশনের রেকর্ড বলছে, ১৯৭৬ সালের ৩রা অগাস্ট রোয়াপুরমের আরএসআরএম সরকারি হাসপাতালে জন্ম হয়েছিল ডেভিডের। মায়ের নাম ধনলক্ষ্মী এবং বাবার নাম কালিয়ামূর্তি। চরম অর্থকষ্ট ছিল ধনলক্ষ্মীর পরিবারের। তাই দুই ছেলেকে তারা রেখে এসেছিলেন একটি চাইল্ড হোমে। চরম দুরাবস্থা কাটিয়ে যখন ধনলক্ষ্মী এবং তার স্বামী ওই চাইল্ড হোমে গিয়ে সন্তানদের আনতে গেলেন, সেই সময়েই তাকে বলা হল যে, ছেলেদের কেউ দত্তক নিয়েছেন।

সেই দিন থেকেই নিজের মনকে একরকম বুঝিয়ে নিয়েছিলেন ধনলক্ষ্মী। নিজেদের হাজার বিপদ আসুক, কিন্তু ডেনমার্কে ছেলেদুটো দুধেভাতেই থাকবে। ডেভিডের ভাই রাজনকেও এক ডানিশ পরিবার দত্তক নেয়। সেই রাজনই এখন মার্টিন ম্যানুয়েল রাসমুস্সেন।

এসএইচ-০৮/২৬/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)