মানুষের খাদ্য হতে যাচ্ছে অজগরের মাংস!

পৃথিবীর সর্ববৃহৎ প্রাণিগুলোর মধ্যে অজগর অন্যতম। অজগরকে ঘিরে রয়েছে নানা গল্প আর পৌরাণিক কাহিনী। ভয়ঙ্কর এই প্রাণিকে নিয়ে হলিউডে নানা চলচ্চিত্রও নির্মাণ হয়েছে। তবে সব জায়গায় অজগরকে দেখানো হয়েছে ভয়ঙ্কর হিসেবে। প্রাণিটি ভয়ঙ্করই বটে। মানুষ, পশু বা অন্যান্য প্রাণি অনায়াশেই আস্ত গিলে ফেলে।

তবে অজগরের মানুষ খাওয়ার যেসব গল্প ও দৃশ্য দেখা যায় তা এবার উল্টে যাচ্ছে। ভয়ঙ্কর এই প্রাণিটি যুক্ত হতে যাচ্ছে মানুষের খাদ্য তালিকায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে। মানুষের খাবারের জন্য অজগরের মাংস উপযোগী কিনা এই পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন ফ্লোরিডাবাসী।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা ইতিবাচক সাড়া দিলেই ফ্লোরিডার মানুষের খাবার মেনুতে যুক্ত হবে বার্মিজ পাইথন।

খবরে বলা হয়েছে, ফ্লোরিডা ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন (এফডব্লিউসি) কমিশন অজগর খাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে অঙ্গরাজ্যটির স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কাজ করছে। নিরাপদ বিবেচিত হলে শিগগিরই সেখানকার হোটেল-রেস্তোরাঁয় বিক্রি হবে অজগরের মাংস।

এফডব্লিউসির মুখপাত্র সিএনএনকে বলেন, ‘এতে থাকা পারদের মাত্রা পরিমাপের বিষয়টি এখনও প্রাথমিক ধাপে রয়েছে। এখন আমরা এর শরীর থেকে সংগৃহীত টিস্যুতে কী পরিমাণ পারদ আছে, তা পরিমাপ করছি।’

উল্লেখ্য, অজগর বা পাইথন (ইংরেজি: pythons) হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম সাপ। অজগরকে ময়াল নামেও ডাকা হয়। এরা বিষহীন আদিম সাপ। এদের পিছনের পা-এর চিহ্ন পুরো বিলুপ্ত হয়নি।

অজগর শিকারকে জোরে পেঁচিয়ে তার দম বন্ধ করে। শিকারকে সাধারণত মাথার দিক থেকে আস্ত গিলে খাওয়া শুরু করে। কারণ, এতে শিকারের বাঁধা দেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়। শিকার হজম করতে তাদের কয়েকদিন সময় লাগে। অজগর কোনো মৃত প্রাণি খায় না।

অজগরের অবলোহিত (তাপ) রশ্মি দেখার বিশেষ তাপদৃষ্টি (infrared vision)ইন্দ্রিয় রয়েছে। অজগরের উপরের ঠোঁট বরাবর এই ইন্দ্রিয় অবস্থিত।

আফ্রিকা মহাদেশের বিষুবীয় সাহারা অঞ্চলে পাইথন পাওয়া যায়। তবে এই মহাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকা যেমন, ওয়েষ্টার্ণ কেপ ও মাদাগাস্কারে এই প্রজাতির সাপ পাওয়া যায় না। এশিয়া মহাদেশে ভারত, বাংলাদেশ,নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এই সাপের বসতি আছে। এছাড়া দক্ষিণ চীন, ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ ও ইন্দোনেশিয়ায় পাইথন দেখতে পাওয়া যায়।

পাইথন একটু দেরিতে প্রজনন শুরু করে। সাধারণত একটি সাপ ৫ থেকে ৬ বছর বয়সে প্রাপ্তবয়স্ক হয়। একটি স্ত্রী পাইথন প্রচুর খাদ্যগ্রহণ করে যথেষ্ট শক্তি অর্জন করার পর একসাথে প্রচুর ডিম পারে।

এসএইচ-০৬/২২/২০ (অনলাইন ডেস্ক)