মৃত বর-কনের সন্ধান দিলেই ২০ লাখ টাকা!

চীনে দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসছে অসমর্থিত প্রথা ‘ভৌতিক বিয়ে’। এই বিয়ের লক্ষ্যেই খোঁজা হয় মৃত বর বা কনেকে। এই প্রথা নিষিদ্ধ থাকলেও দেশটির বহু জায়গায় এ কুসংস্কার এখনো প্রচলিত রয়েছে।

চলতি সপ্তাহে পূর্ব চীনের শানডং প্রদেশের একজন নারী আত্মহত্যা করেন। তাকে দাহ করার পর ছাই বিক্রির জন্য প্রস্তাব দেওয়া হলে তার পরিবারের সদস্যরা মানেননি। কিন্তু অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত কর্মী চুরি করে তা বিক্রি করে দিয়েছে। কারণ, কেউ একজন তার মৃত ছেলের কবরে ওই ছাই রাখতে চেয়েছিলেন ‘ভৌতিক বিয়ের’ জন্য। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত কর্মীকে আটক করেছে স্থানীয় পুলিশ।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, এ বিয়ের উদ্দেশ্য হলো মৃত ব্যক্তির জন্য একজন সঙ্গীর জোগান দেওয়া। কিছু বয়স্ক চীনার মধ্যে এখনো দৃঢ বিশ্বাস, লোকজন যদি মৃত্যুর পর তার সেই ইচ্ছে পূরণ না করে, তবে সে শান্তিতে বিশ্রাম নিতে পারবে না। আবার পৃথিবীতে ফিরে আসবে। এ বিশ্বাস থেকেই চালু হয়েছিল ভৌতিক বিয়ে।

এ বিয়ের জন্য রয়েছে ম্যাচমেকারও। যারা মৃত বর বা কনের সন্ধান দেন তাদেরকে বলা হয় ম্যাচমেকার। এরা পারিশ্রমিক হিসাবে পান দেড় লাখ ইউয়ান, যা বাংলাদেশি টাকায় ২০ লাখ।

জানা যায়, মৃতদের বিয়ে হয় জীবিতদের মতোই। অভিভাবকরা ম্যাচমেকারের কথার মাধ্যমে তাদের সন্তানদের জন্য একটি উপযুক্ত মিল খোঁজেন। তারপরে তারা অন্য পরিবার সম্পর্কে, সম্ভাব্য স্বামী-স্ত্রীর পেশা, বয়স সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। এগুলোর মধ্যে একটি মিল আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে একটি ছবিও দেখাতে হয়। তারা একটি বিবাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এবং একটি নতুন কবর খুঁড়ে সেগুলোকে এক সঙ্গে দাফন করেন।

নারীদেহের দাম সাধারণত বয়স, শরীরের সতেজতা, দেহের গড়ন, চেহারা, পারিবারিক বৃত্তান্তের ওপর নির্ধারণ হয়। যেমন, সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া নারীর চেয়ে সাধারণ রোগে মারা যাওয়া নারীর দাম বেশি দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন ম্যাচমেকার বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে বাজারটি সমৃদ্ধ হয়েছে। ১৯৯০-এর দশকে একটি ম্যাচের জন্য পাওয়া যেত প্রায় পাঁচ হাজার ইউয়ান।

১৯৪৯ সালে চীনা কমিউনিস্ট সরকার এই প্রথাটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছিল। এটি কমলেও প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে, বিশেষ করে উত্তর চীনে ভৌতিক বিয়ের এ প্রথা এখনো অব্যাহত আছে।

এসএইচ-২৩/০৫/২১ (অনলাইন ডেস্ক)