মোরগের কণ্ঠে আল্লাহ আল্লাহ ডাক কি কেয়ামতের আলামত?

মোরগের কণ্ঠে আল্লাহ আল্লাহ ডাক! শুনে অবাক হওয়ারই কথা। এমন অবিশ্বাস্য ঘটনাই ঘটেছে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ডিগ্রিপাড়া এলাকার সাইদুর মোল্লার বাড়িতে। এখন তার বাড়িতে প্রতিদিন ভিড় করছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা কৌতূহলী মানুষ। প্রকাশিত ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ঠিক মানুষের মতো করেই মোরগটি উচ্চৈঃস্বরে আল্লাহ আল্লাহ করে ডাকছে! এলাকাবাসীর দাবি, এটি সৃষ্টিকর্তার বিশেষ কুদরতি প্রদর্শন ছাড়া আর কিছুই নয়।

ইসলাম ধর্ম মতে কেয়ামতের যেসব আলামত রয়েছে তাদের মধ্যে একটি হলো কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে প্রাণী এবং জড় পদার্থ মানুষের সঙ্গে কথা বলবে। আল্লাহ রাববুল আল-আমিন মানুষকে কথা বলার শক্তি দিয়েছেন। তিনি চাইলে অন্যান্য সৃষ্ট জীবকেও কথা বলার ক্ষমতা দিতে সক্ষম।

এক হাদিস থেকে জানা যায়, একবার জনৈক রাখাল মাঠে ছাগল চরাচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি নেকড়ে বাঘ এসে একটি ছাগলের ওপর আক্রমণ করল। রাখাল বাঘের পিছনে ধাওয়া করে ছাগলটি ছিনিয়ে আনলেন। বাঘটি একটি টিলার ওপর বসে বলতে লাগলো: তুমি কী আল্লাহকে ভয় কর না? আল্লাহ আমাকে একটি রিজিক দিয়েছিলেন। আর তুমি তা ছিনিয়ে নিলে।

রাখাল বলল: কী আশ্চর্য ব্যাপার! মানুষের ন্যায় বাঘও আমার সঙ্গে কথা বলছে। বাঘ বলল: আমি কি তোমাকে এর চেয়ে আশ্চর্যজনক খবর দেব না? মদিনায় হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতীতে যা ঘটেছে এবং আগামীতে যা ঘটবে তা সম্পর্কে মানুষকে সংবাদ দিচ্ছেন।

রাখাল তার ছাগলের পাল নিয়ে মদিনায় প্রবেশ করে ছাগলগুলো এক স্থানে রেখে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এলেন। ততক্ষণে নামাজের সময় হয়ে গেল। নামাজ শেষে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাখালকে বললেন, ‘তুমি সবার সামনে ঘটনা খুলে বল।’ সে ঘটনা বর্ণনা শেষ করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘রাখাল সত্য বলেছে।

ওই আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না হিংস্র প্রাণী মানুষের সাথে কথা বলবে। মানুষ তার হাতের লাঠির সাথে কথা বলবে, পায়ের জুতার সাথে কথা বলবে। এমনকি ঘরের স্ত্রী তার স্বামীর অনুপস্থিতে কি করছে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাকে বলে দেবে।’

সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া মোরগের কণ্ঠে আল্লাহ আল্লাহ ডাক বিষয়টি নিয়ে কথা হয় একজন ইসলামী চিন্তাবিদের সঙ্গে। এ ঘটনার ব্যাপারে ইসলাম কী বলে। সে প্রশ্নই ছিল তার কাছে।

এ প্রসঙ্গে মুফতি মাহমুদুল হক জালীস বলেন, কেয়ামতের আগে কী কী ঘটবে বা আলামত প্রকাশ পাবে তার অনেক কিছুই নবীজি আমাদের বলে গেছেন। তার মধ্যে একটা আলামত হলো জড় পদার্থ বা হিংস্র প্রাণীও মানুষের সঙ্গে কথা বলবে। যেহেতু মোরগের মুখ থেকে আল্লাহ আল্লাহ ডাক উচ্চারিত হচ্ছে, তার মানে আমরা বলতে পারি কেয়ামতের যে ছোট আলামত রয়েছে এটার মাধ্যমে তার কিছুটা হলেও প্রকাশ ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, মোরগ আল্লাহ আল্লাহ ডাকছে-এটাকে আল্লাহর কুদরতি ক্ষমতার প্রকাশ হিসেবেও মন্তব্য করা যায়।

কেয়ামত কবে বা কখন সংগঠিত হবে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো দিন বা তারিখের কথা কোথাও উল্লেখ নেই। ইসলাম ধর্ম মতে, একজন প্রাণীর যেমন মৃত্যু নিশ্চিত, ঠিক তেমনই মহাপ্রলয়ের মাধ্যমে একদিন কেয়ামত সংগঠিত হবে সেটাও নিশ্চিত। তবে কেয়ামতের আগে, কী কী হবে বা কী কী ঘটতে পারে তার ব্যাখ্যা পবিত্র কোরআন শরীফ ও হাদিসে বর্ণনা করা আছে। যার অনেক কিছুই এখন সময়ের সাথে আমাদের সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

এসএইচ-১১/১৪/২২ (অনলাইন ডেস্ক)