ইনকিউবেটর বন্ধ, ফয়েলে মুড়িয়ে রাখা হচ্ছে নবজাতকদের!

ইসরাইলি বাহিনীর অন্যতম লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে গাজার হাসপাতালগুলো। বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটির প্রায় সব হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতির মাঝে জন্ম নেয়া অপরিণত নবজাতকদের বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন স্থানীয় চিকিৎসকরা। জানা গেছে, বিদ্যুৎ ও অক্সিজেন সরবরাহের অভাবে হাসপাতালের ইনকিউবেটর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নবজাতকদের ফয়েল পেপারে মুড়িয়ে গরম পানির পাশে রাখা হচ্ছে।

অপরিণত বয়সে জন্ম নেয়া নবজাতকদের ইনকিউবেটরে রাখতে হয়, যা চালাতে প্রয়োজন হয় বিদ্যুতের। কিন্তু বিদ্যুৎহীন গাজায় জ্বালানি ঢুকতে না দেয়ায় হাসপাতালগুলোর জেনারেটর বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ইনকিউবেটরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফুরিয়ে গেছে অক্সিজেনও।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রথম থেকেই ইসরাইলের মূল লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে গাজার আল-শিফা হাসপাতাল। এর আশপাশের এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী।

অন্যদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, আল-শিফা হাসপাতালের জ্বালানি ফুরিয়ে গেছে আগেই। এতে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র, শিশু বিভাগ, অক্সিজেন ডিভাইসগুলোসহ বন্ধ হয়ে গেছে উপত্যকার সবচেয়ে এই বড় হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম।

সোমবার পর্যন্ত হাসপাতালটিতে মোট ছয় অপরিণত নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নবজাতকদের বাঁচিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। বিদ্যুৎ ও অক্সিজেন সরবরাহ ফুরিয়ে যাওয়ায় ইনকিউবেটর থেকে বের করে তাদের ফয়েল পেপারে মুড়িয়ে গরম পানির পাশে রাখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে হাসপাতালটির পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেছেন, অপরিণত নবজাতকদের ইনকিউবেটর থেকে বের করে ফয়েল পেপারে মুড়িয়ে গরম পানির পাশে রাখা হয়েছে। যাতে তারা উষ্ণ থাকে। বিদ্যুতের অভাবে হাসপাতালের ভেতরের কোনো অপারেটিং কক্ষই কাজ করছে না। যাদের অস্ত্রোপচার প্রয়োজন, তারা মারা যাচ্ছেন। আমরা কিছুই করতে পারছি না।

এদিকে, ইসরাইলি বাহিনী আল-শিফা হাসপাতালের কাছে কাউকে দেখতে পেলেই তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে। যার ফলে হাসপাতালটির ভেতরে আশ্রয় নেয়া হাজার হাজার মানুষ আটকা পড়েছেন। ফলে সেখানে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসার অভাবে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে মানুষ। লাশগুলো দাফন করারও সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে না।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলা আল শিফা হাসপাতালের পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন। তার উদ্ধৃতি দিয়ে মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, হাসপাতাল (আল-শিফা) চত্বরে স্তুপ করে রাখা হয়েছে বহু লাশ। দাফন না করায় সেগুলো পচে যাচ্ছে। সেসব লাশ এখন রাস্তার কুকুরের খাবারে পরিণত হয়েছে।

এসএইচ-০৪/১৪/২৩ (অনলাইন ডেস্ক)