ভারতীয় মিডিয়ার মিথ্যাচার প্রমাণিত হলো

ভারতীয় গণমাধ্যম যে ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশের জনগণকে ঘোল খাওয়াতে সংবাদ প্রকাশের মৌলিক নিয়মগুলিও ভঙ্গ করছে তার প্রমাণ মিলল আবারো যখন কিনা পাকিস্তান বিমান বাহিনীর পাইলট শাহাজ উদ্দিন এর নিহত হবার ঘটনাটি স্রেফ গুজব হিসেবে প্রতীয়মান হলো।

ভারতের জনপ্রিয় সংবাদসংস্থা ‘ফার্স্টপোস্ট’ তাদের ওয়েবসাইটে গত বুধবার একটি ‘বিতর্কিত’ সংবাদ প্রকাশ করে যেখানে বলা হয় ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমানের সাথে পাকিস্তানের এফ-১৬ এর ডগফাইটে এফ-১৬ এর পাইলট শাহাজ উদ্দিন নিহত হয়েছেন।

সংবাদটিতে দাবি করা হয়, ভারতীয় যুদ্ধবিমানের সাথে ডগফাইটের একপর্যায়ে পাকিস্তানি এফ-১৬ টি খাইবার পখতুনখাওয়া’র নওশেরা সিটির কাছে ভূপাতিত হয়; পরে স্থানীয় পাকিস্তানি জনগণ বিমানটির পাইলট শাহাজ উদ্দিন কে ভারতীয় ভেবে হত্যা করে।

‘ফার্স্টপোস্ট’ পত্রিকাটি আরো দাবি করে নিহত শাহাজ উদ্দিন পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর এয়ার মার্শাল ওয়াসিম উদ্দিন এর সন্তান।

খবরটি প্রকাশ হবার বেশ কিছু সময় পরে ‘হাদিয়া’ নাম করে একজন পাকিস্তানি নাগরিক যিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনীর উল্লেখিত কর্মকর্তা ওয়াসিম উদ্দিনের পরিবারের একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে জানান ‘ফার্স্টপোস্ট’ এর করা খবরটি একেবারেই বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন।

ওয়াসিম উদ্দিন পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন একথা সত্য কিন্তু তিনি অবসরে গেছেন অনেক বছর হয়ে গেছে; এমনকি তিনি যে পদে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে আছেন বলে দাবি করা হয়েছে সেটাও মিথ্যা! প্রকৃতপক্ষে ওয়াসিম উদ্দিন ছিলেন পাকিস্তান বিমান বাহিনীর ডেপুটি চীফ অব এয়ার স্টাফ অথচ ভারতীয় পত্রিকা ফার্স্টপোস্টে বলা হয় তিনি একজন এয়ার মার্শাল! এবং সবচেয়ে বড় ব্যাপারটি হচ্ছে তার কোনো সন্তানই পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত নেই!

আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, ওয়াসিম উদ্দিনের দুই ছেলের একজনের নামও ‘শাহাজ’ নয়! একজনের নাম আলিম, অন্যজন ওয়াকার। আর তারা কেউ পাকিস্তানেই থাকেন না!

এছাড়াও, পাকিস্তানে যে কারো নাম ‘শাহাজ’ রাখা হয় না সেটা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটু ঘাটাঘাটি করলেই বোঝা যাবে। ‘শাহাব’ হয়, ‘শেহজাদ’ হয় কিন্তু ‘শাহাজ’ শুধুই ভারতীয় পত্রিকাটির মস্তিষ্ক প্রসূত একটি নাম যার কোনো সত্যতা নেই।

এটি যে পুরোপুরিই একটি প্রোপ্যাগান্ডা তা বোঝা যায় পাকিস্তানের স্থানীয় জনগণের দ্বারা ‘শাহাজ উদ্দিন’ নামক এক কল্পিত বৈমানিককে হত্যা করার কথা বললে। মূলত এই ধরণের অপারেশনে থাকার সময় যে কোনো দেশের সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাই তার নিজ দেশের ইউনিফর্ম পরে থাকে। সুতরাং পাকিস্তানের অত্র এলাকার জনগণের ‘শাহাজ উদ্দিন’ কে ভারতীয় বৈমানিক বলে ভুল করার কোনো কারণই থাকতে পারে না।

এসএইচ-৩০/০৮/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)