নোবেল শান্তি পুরস্কারের তালিকায় ইমরান খান!

প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি অলাভজনক সংবাদ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটর নামের ওই প্রতিষ্ঠানের সম্পাদকীয় বোর্ড নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য বেশ কয়েকজন যোগ্য প্রার্থীর সঙ্গে ইমরান খানের নাম তালিকাভূক্ত করেছে। পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

দ্য ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটর নিজেদের দৃষ্টিতে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের আগাম তালিকা প্রকাশ করেছে। তাদের সম্পাদকীয় বোর্ড পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য যোগ্য হিসেবে তালিকাভূক্ত করে বলছে, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় তিনি যে কাজটি করেছেন; তা কলহপূর্ণ বর্তমান বিশ্বের শান্তিপ্রিয় নেতৃত্বের একটি ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত।’

দ্য ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটর ইমরান খানকে নোবলে পুরস্কারের জন্য যোগ্য বর্ণনা দিয়ে লিখেছে, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার নিদর্শন হিসেবে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিজেরে সীমানায় বিমান ভূপাতিত করে আটক পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করলে বিদ্যমান পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। দেশটির প্রথাগত রাজনৈতিক আচরণের সঙ্গে তার এমন সিদ্ধান্ত অনেকটা আশ্চর্যের।’

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়া হোক এমন দাবি আসছে আটক ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার নিদর্শন’ হিসেবে ভারতের কাছে হস্তান্তরের পর থেকে। কাশ্মীরে আত্মঘাতী বোমা হামলার পর ভারত পাকিস্তানে ঢুকে বিমান হামলা চালায়। পরে পাকিস্তানও ভারতের বিমান ভূপাতিত করে পাইলট অভিনন্দনকে আটক করে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ভারতের সেন্ট্রাল রিজাভ পুলিশ ফোর্সের (সিপিআরএফ) অন্তত ৪০ জওয়ান নিহত হয়। ঘটনার বারো দিন পর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তান সীমান্ত পার হয়ে দেশটিতে বোমা হামলা করে। পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে পাইলট অভিনন্দনকে আটক করে দেশটির সেনাবাহিনী।

বিমান হামলা ও পাল্টা হামলার মুখে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে বিদ্যমান পরিস্থিতি যখন একটা অবশ্যম্ভাবী যুদ্ধের দিকে এক পা বাড়িয়ে দিয়েছে ঠিক তখনই পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দেশটির সংসদে ঘোষণা দেন ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার নিদর্শন’ হিসেবে আটক পাইলটকে মুক্ত করে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

বিশ্লেষকরা যখন আশঙ্কা করছিলেন দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ একটা যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে তখন ইমরান খান শুধু এমন ঘোষণাই দেননি, পরদিন আটক পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে ভারতের কাছে হস্তান্তরও করে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ। পাইলট মুক্ত হলে দুই দেশের মধ্যে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যায়।

তারপর থেকে ইমরান খানকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি উঠতে থাকে। অনেকে হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে ইমরানকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়ার জন্য জোড়ালো দাবি তোলেন। এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী এই সংবাদমাধ্যমটিও তাদের নোবল তালিকায় ইমরানের নাম অন্তর্ভূক্ত করলো।

এসএইচ-২২/১০/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)