মুসলমানদের ওপর চালানো আলোচিত হামলা

পশ্চিমা দেশগুলোতে মুসলমানদের ওপর যে ধারাবাহিক হামলার ঘটনা ঘটে আসছে, শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে হামলা তারই অংশ এবং যতটা সম্ভব এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।

গবেষকরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাজ্য, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য রাষ্ট্রে মুসলিমবিরোধী যেসব হামলা হয়েছে তা লিপিবদ্ধ করেছেন।

আলজাজিরা অবলম্বনে তার মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ হামলার সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরা হলো-

২০১৬ সালের আগস্ট

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে এক ইমাম ও তার সহযোগীকে কুইন্সে তাদের মসজিদের পাশের ব্যস্ত রাস্তায় গুলি করে হত্যা করা হয়। মার্কিন পুলিশ জানায়, এটি ঘৃণ্য (মুসলিম বিদ্বেষী) অপরাধ। পরে ওই ঘাতককে আটক এবং তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়।

২০১৬ সালের ডিসেম্বর

সুইজারল্যান্ডের মধ্য জুরিখের একটি মসজিদে ৩০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ঢুকে পড়ে এবং সেখানে থাকা বেশ কিছু মুসল্লির, যারা মাগরিবের নামাজ শেষে চা পান করছিলেন, ওপর গুলি চালাতে থাকে। এ ঘটনায় তিনজন আহত হয়।

এ ছাড়া হামলার কিছু সময় আগে ওই একই ব্যক্তি গুলি করে আরেকজনকে হত্যা করে। ওই হামলাকারী পালিয়ে গেলেও পরে মসজিদের পাশের নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

২০১৭ সালের জানুয়ারি

কানাডার কুইবেক শহরের মসজিদে মাগরিবের নামাজের সময় ২৭ বছর বয়সী আলেজান্দ্রে বিসোনেট ঢুকে পড়ে এবং ছয় নামাজিকে হত্যা ও অনেককে আহত করে।

নিহতদের মধ্যে একজন ওই বন্দুকধারীকে ঠেকাতে গিয়ে মারা যান। এ হামলায় ১৯ জন আহত হয়। পরে বিসোনেটের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।

২০১৭ সালের মে

যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য ওরিগনে ট্রেনে এক ব্যক্তি দুই মুসলিম নারীকে হেনস্থা করছিল। তাদের চিৎকার শুনে দুই মুসলিম এগিয়ে এসে তাকে থামানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তাদের ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে ওই ব্যক্তি।

পরে জানা যায়, ৩৫ বছর বয়সী ওই হামলাকারীর নাম জেরেমি জোসেফ খ্রিস্টিয়ান। ওই ঘটনায় আরেকজন গুরুতর আহত হন।

২০১৭ সালের জুন

লন্ডনের একটি মসজিদ থেকে এশার নামাজ শেষে বেরিয়ে আসছিলেন মুসলিমরা। এ সময় ৪৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি তাদের ওপর ভ্যান (গাড়ি) উঠিয়ে দেয়। এতে ৫১ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মারা যায় এবং নয়জন আহত হয়।

ওই সময় খবরে বলা হয়, ড্যারেন ওসব্রোন নামের ওই চালক হামলার পর চিৎকার করে বলেন, ‘আমি সব মুসলিমকে হত্যা করতে চাই- আমি খুব কমই পেরেছি।’

পরে সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত অভিযোগে তার ৪৩ বছরের সাজা হয়।

২০১৭ সালের আগস্ট

বার্সেলোনা ও কাম্ব্রিলে ভয়াবহ হামলা পর স্পেনে মুসলমানদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়ে যায়। সেইসঙ্গে গ্রানাডা, ফুয়েনলাব্রাডা, লগ্রোনো ও সেভিলিতে মসজিদ অপবিত্রকরণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা বেড়ে যায়।

নাভারেতে মরক্কোর তিন নাগরিকের ওপর নির্মমভাবে হামলা করা হয়। অন্যদিকে, মাদ্রিদ মেট্রোতে এক মুসলিম নারীকে মেরে আহত করা হয়।

২০১৯ সালের মার্চ

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদ ও লিনউডের একটি মসজিদে ভয়াবহ হামলা চালায় অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত ২৮ বছর বয়সী ডানপন্থী উগ্রবাদী খ্রিস্টান সন্ত্রাসী ব্রেনটন টারান্ট। ১৫ মার্চ জুমার নামাজের সময় চালানো ওই নৃশংসতায় অন্তত ৪৯ মুসলিম নিহত এবং ৪৮ জন গুরুতর আহত হয়।

এসএইচ-১৬/১৭/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)