গণ-আত্মহত্যা করতে চান সেই মুসলিম পরিবারের সদস্যরা

হোলির দিন বাড়ির বাইরে ক্রিকেট খেলার অভিযোগে যে মুসলিম পরিবারটিকে লাঠি, হকিস্টিক, রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছিল উগ্রপন্থী একদল হিন্দু যুবক; সেই মুসলিম পরিবারটির সব সদস্য এবার একসঙ্গে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন। মারধরের ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ নিস্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে, এমন অভিযোগ এনে ওই হুমকি দিয়েছে পরিবারটি।

গত ২১ মার্চ ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুগ্রামের ভূপ সিংহ নগরে তাড়া করে ঘরে ঢুকে, মাটিতে ফেলে, রীতিমতো লাঠি এবং রড দিয়ে রক্তাক্ত করা হয় ওই মুসলিম পরিবারকে। এমনকি তাদের ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে চলে যাওয়ার হুমকিও দেয় হামলাকারী সন্ত্রাসীরা।

স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের পরোক্ষ সম্মতিতে হামলাকারীদের পক্ষে জেলা পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আক্রান্ত ওই মুসলিম পরিবারের সদস্য মোহাম্মদ আখতার বলেন, এই বিষয়টি এখন উন্মুক্ত। প্রত্যেকেই জানেন যে, কীভাবে গুণ্ডারা আমাদের ওপর পূর্বপরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, এখনও জেলা পুলিশ আমাদের সহায়তা করছে না। এমনকি অভিযুক্ত ও তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য আমাদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে হামলাকারী।

আখতার বলেন, তারা বাড়িতে এসে আমাদের নারী ও তরুণীদের হেনস্থা করেছে। এই ঘটনায় পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন যদি হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি না করে তাহলে আমরা গণ-আত্মহত্যা করবো। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এই মামলার বিচারকার্য পরিচালনার জন্য আক্রান্ত পরিবারটি সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদেরকে চাপে রাখার কৌশল বেছে নিয়েছে পুলিশ। এ জন্য পুলিশ আমাদের পরিবারের দুই সদস্যের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে।

গত ২১ মার্চ হোলির দিন ভূপ সিংহ নগরে বাড়ির কাছে ক্রিকেট খেলছিলেন কয়েকজন মুসলিম যুবক। ওই সময় মদ্যপ অবস্থায় ৩০ থেকে ৩৫ জন দুর্বৃত্ত আসে সেখানে। হোলির দিন কেন ক্রিকেট খেলছে, এই প্রশ্ন তুলে তাদের সঙ্গে বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে তারা।

এই নিয়ে কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটি চলে দু’পক্ষের মধ্যে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে গেলে লাঠি, রড, হকিস্টিক দিয়ে তাদের মারধর করতে শুরু করে দুর্বৃত্তরা। এমনি পাকিস্তানে চলে যাওয়ার হুমকিও দেয়া হয়। বাড়িতে ঢুকে মাটিতে ফেলে সেগুলো দিয়েই বেধড়ক মারধর শুরু করে দেয়।

পরিবারের বাকি সদস্যরা বাধা দিতে এলে তাদেরও হেনস্থা করা হয়। আক্রান্ত এই মুসলিম পরিবারটি গুরুগাঁওয়ে গত ১৫ বছর ধরে বসবাস করে আসছে।

 এসএইচ-১৪/০২/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক, তথ্য সূত্র : ইন্ডিয়া ট্যুডে)