গণপিটুনিতে নিহত দুধ ব্যবসায়ীর নামেই চার্জশিট!

ভারতের উগ্রপন্থী হিন্দুত্ববাদী গো-রক্ষকদের গণপিটুনিতে নিহত এক দুধ ব্যবসায়ীর নামেই অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। রাজস্থানের দুধ ব্যবসায়ী পেহলু খান দুই বছর আগে গো-রক্ষকদের গণপিটুনিতে মারা যান। দীর্ঘদিন পর পুলিশের বিতর্কিত এই চার্জশিট ঘিরে দেশটিতে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে।

রাজস্থানের অলওয়ারে হইচই ফেলে দেয়া ওই ঘটনার সময় রাজ্যের ক্ষমতায় ছিল বিজেপি সরকার। সেখানে এখন ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে। এসেছে কংগ্রেসের অশোক গহলৌতের সরকার।

তবে সেই ঘটনার প্রায় দু’বছর পর গণপিটুনিতে নিহত পেহলু খানের বিরুদ্ধেই গরু পাচারের অভিযোগে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। সেই সময় ওই ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল রাজ্যের তৎকালীন বিরোধী দল কংগ্রেস। সরব হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌত।

তবে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারকে সরিয়ে রাজস্থানে ক্ষমতা দখলের পর মুখ্যমন্ত্রী গহলৌতের বক্তব্য, তারা নিজেদের অবস্থান বদল করেননি। বিজেপি সরকারের আমলেই ঘটনার তদন্ত করা হয়েছিল, প্রয়োজনে পুনরায় তদন্ত করা হোক।

শুধুমাত্র পেহলু খান নন; চার্জশিটে নাম রয়েছে তার দুই ছেলে আরিফ খান ও ইরশাদ খান এবং পিকআপ ট্রাকের চালকেরও। ২০১৭ সালের এপ্রিলে জয়পুরের একটি পশুহাট থেকে গরু কিনে বাড়ি ফিরছিলেন ৫৫ বছরের পেহলু। সঙ্গে ছিলেন তার দুই ছেলে আরিফ ও ইরশাদ। অলওয়ারে তাদের গাড়ি থামায় গো-রক্ষকেরা। গরু পাচারের অভিযোগ এনে বেধড়ক মারপিট করা হয় তাদের। গরু কেনার রসিদ দেখিয়েও কোনো লাভ হয়নি। কিন্তু পুলিশের দাবি ছিল, তাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ছিল না।

মারধরের পর আহত অবস্থায় পেহলু খানকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই মারা যান তিনি। গুরুতর আহত হন তার দুই ছেলে। রাজস্থান পুলিশ সেসময় দু’টি এফআইআর দায়ের করে। প্রথম এফআইআরে আটজনের বিরুদ্ধে পেহলুকে মারধরের অভিযোগ আনা হয়।

দ্বিতীয় এফআইআরে অভিযোগ করা হয়, জেলাপ্রশাসকের বিনা অনুমতিতে পেহলু ও তার দুই ছেলে গরু পাচার করছিলেন। তবে ওই আট অভিযুক্তই পরে জামিন বেরিয়ে যান। ওই ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

গত বছরের ডিসেম্বরে এই চার্জশিট তৈরি করা হয়েছিল। তবে রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার গঠনের পর চলতি বছরের ২৯ মে বেহররের একটি আদালতের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তা পেশ করা হয়।

এই ঘটনায় চার্জশিট পাওয়ার খবরে হতবাক পেহলু খানের পরিবার। পেহলুর ছেলে ইরশাদ বলেন, কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারা ভেবেছিলেন অবস্থার পরিবর্তন হবে।

এসএইচ-২৩/২৯/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)