আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা প্রকাশ হচ্ছে শনিবার

ভারতের আসাম রাজ্যে অনুপ্রবেশকারী বিদেশি নাগরিক কারা তার চূড়ান্ত তালিকা জানা যাবে শনিবার। এ তালিকার খসড়া থেকে ইতোমধ্যে বাদ পড়েছে প্রায় দুই লাখ মানুষ। তাই নাগরিকত্ব হারানোর শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ছে আরও অনেকের মধ্যে।

অনুপ্রবেশকারীদের যাছাই বাছাইয়ের কাজ এখনও পুরোপুরি সম্পূর্ণ করতে পারেনি এ কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা। চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণার এক দিন আগেও দলিল দস্তাবেজ নিয়ে ডাকা হচ্ছে সন্দেহের তালিকায় থাকা বাঙালিদের। এতেই প্রশ্ন উঠছে শেষ মুহূর্তে যাদের শুনানিতে ডাকা হচ্ছে তাদের নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে শেষ পর্যন্ত?

রাজ্যের সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হচ্ছে, আসামের বহু নাগরিককে বৃহস্পতিবারও নোটিশের মাধ্যেমে শুনানিতে হাজির হতে হয়েছে। জানা গেছে শুনানিতে হাজির হওয়া বেশিরভাগই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। তাদের পূর্ব পুরুষের নাগরিকত্ব নিয়ে নানা রকম প্রমাণপত্র দেখতে চাওয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুক্রবারও নাগরিকত্ব যাচাইয়ের প্রক্রিয়া জারি থাকবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, একেবারে শেষ মুহূর্তে শুনানি নিয়ে এনআরসিতে কারও নাম অন্তর্ভুক্তি বা ছাটাই করা কী করে সম্ভব? কারণ প্রকাশ করার আগে এই তালিকায় কারও নাম চূড়ান্ত করতে অনেকটা সময়ের প্রয়োজন হয়।

কিন্তু সেই সংশয় রেখেই শুনানি পর্ব এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন আসামের নাগরিকপঞ্জি কর্তৃপক্ষ।

চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের মাত্র একদিন আগে নোটিশের মাধ্যেমে এভাবে ডেকে এনে জেরা করা নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করেছেন অল অসম মাইনরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন ‘আমসু’। সংগঠনটির একজন নেতা আজিজুর রহমান আসামের স্থানীয় বাংলা পত্রিকা দৈনিক যুগশঙ্খকে বলেছেন, যেভাবে শেষ মুহূর্তে এসেও শুনানি চালানো হচ্ছে তাতে এনআরসি কতটা শুদ্ধ হবে সেই সংশয় রয়েছে আমাদের। এব্যাপারে উচ্চ আদালতের ওপর আস্থা থাকার কথা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বিদেশির সংখ্যা বাড়াতে ইচ্ছাকৃতভাবে কারও নাম কর্তন করা হলে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পাশাপাশি নাগরিকপঞ্জি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও তারা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবেন।

তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, এনআরসি নিয়ে গুঞ্জনে বিশ্বাস করবেন না। তালিকা থেকে কেউ বাদ পড়লেই তাকে বিদেশি হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হবে না। প্রত্যেকেই বিদেশি ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবে।

এনআরসি তালিকা থেকে রেকর্ডসংখ্যক মুসলিমদের বাদ দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার দেশটির ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশনের (ইউএসসিআইআরএফ) এক বিবৃতিতে বলা হয়, আসামের নাগরিক তালিকা সেখানকার সংখ্যালঘু মুসলিমদের রাষ্ট্রহীন করার হাতিয়ারে পরিণত হতে পারে। এ ধরনের পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে ইউএসসিআইআরএফ।

এসএইচ-১৯/৩০/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)