অপারেশন বাগদাদির ভিডিও ঘিরে বিতর্ক

কীভাবে অভিযান চালিয়েছিল মার্কিন সেনা? শীর্ষ আইএস জঙ্গি আবু বকর আল বাগদাদির ডেরা কেমন ছিল, ধ্বংস করে দেওয়ার পরেই বা কেমন চেহারা নিয়েছে। অপারেশন বাগদাদির এই গোটা পর্বের ভিডিও প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদরদপ্তর পেন্টাগন।

মার্কিন সেনারা কীভাবে ঘিরে ফেলেছিল বাগদাদির ডেরা এবং কীভাবে আকাশ পথে হামলা চালানো হয়েছিল, তার মোটামুটি একটা ছবি ধরা পড়েছে ওই ভিডিওতে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে মার্কিন প্রশাসনের তরফে।

ভিডিওটি প্রকাশ করেন ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার কেনেথ ম্যাকেঞ্জি। সাংবাদিক সম্মেলনে বাগদাদির ডেরায় অভিযানের ভিডিও দেখানোর পরে সংবাদ মাধ্যমের হাতে তুলে দেন ওই ভিডিও ও ছবি। সাদাকালো ওই ভিডিওতে বাগদাদির ডেরায় অভিযানের সময়কার ছবি ধরা পড়েছে।

আকাশ থেকে তোলা ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, উঁচু পাচিলে ঘেরা একটি কম্পাউন্ড। সেটির দিকে ধীরে ধীরে সন্তর্পণে এগিয়ে যাচ্ছে মার্কিন সেনা। ওই ডেরার আশেপাশে থাকা বেশ কিছু মানুষকেও দেখা যাচ্ছে। ভেতরেও দু’-একজনের গতিবিধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

ম্যাকেঞ্জির দাবি, মার্কিন বিমান লক্ষ্য করে গুলি চালানোর চেষ্টা হয়েছিল। এর কিছুক্ষণ পরেই দেখা যায়, উপর থেকে ওই বাড়িটির উপর একের পর এক বোমা আছড়ে পড়ছে। তার পরেই বাড়িটি পুরো কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। একটা সময় আগুন জ্বলতেও দেখা যাচ্ছে ওই বাড়িটিতে।

ভিডিওর পরে অংশে দেখা যাচ্ছে, ওই ডেরা তথা উচু পাঁচিল ঘেরা বাড়িটি পুরো ধুলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। কোথাও সামান্য নির্মাণও অবশিষ্ট নেই। ফাঁকা জায়গায় কয়েকটি গর্তের মতো। কয়েক জনের আনাগোনাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে ওই ধ্বংসস্তূপে।

ম্যাকেঞ্জির দাবি, অভিযানের সময় বাগদাদি একটি সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়েন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, কুকুরের মতো মরেছে বাগদাদি। তার সঙ্গে তিন ছেলেকে নিয়ে বোমায় নিজেকে উড়িয়ে দেয় সে। কিন্তু ম্যাকেঞ্জির দাবি, তিন নয়, দুই ছেলেকে নিয়ে আত্মঘাতী বোমা ফাটায় বাগদাদি। মৃত্যুর আগে বাগদাদি চিৎকার-আর্তনাদ করেছিলেন বলে যে বর্ণনা দিয়েছিলেন ট্রাম্প, পরিস্থিতি যে অতটা নাটকীয় ছিল না, সেই ইঙ্গিতও মিলেছে ম্যাকেঞ্জির কথায়।

কিন্তু ভিডিওতে এই অংশের কোনো ছবি বা প্রমাণ নেই। উপর থেকে বোমা পড়ার পরেই ধ্বংসস্তূপ। মাঝের সময়ের কোনো ছবি বা ভিডিও নেই। অথবা প্রকাশ করা হয়নি। তাই অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, পুরো ভিডিও কেন প্রকাশ করা গেল না। আবার যদি মার্কিন সেনার হাতে না থাকে, তাহলে অভিযানের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে।

তাহলে কীভাবে প্রমাণিত হল বাগদাদি মৃত? ম্যাকেঞ্জির দাবি, ডিএনএ পরীক্ষায়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার বাগদাদির দেহের অংশ থেকে নমুনা নিয়ে মিলিয়ে দেখা হয় ২০০৪ সালে ইরাকের জেলে বন্দি থাকা বাগদাদির ডিএনএ-র সঙ্গে। তাতেই ডিএনএ মিলে গিয়েছে বলে দাবি ম্যাকেঞ্জির।

খবর রটেছিল মার্কিন সেনার হাতে দু’জন আটক হয়েছিল অভিযানে। কিন্তু সেই খবর নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি ম্যাকেঞ্জি। তিনি শুধু জানান, বাগদাদি ছাড়াও আরও ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও নথিপত্র।

এসএইচ-১২/৩১/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)