মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলাকে স্বাগত জানিয়েছে কারেন বিদ্রোহীগোষ্ঠী

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিজে ও আইসিসির মামলাকে স্বাগত জানিয়েছে কারেন বিদ্রোহীগোষ্ঠী। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ মামলাকে সমর্থন জানিয়ে স্বাগত জানানো হয়।

মিয়ানমারে ৭০ বছর ধরে জাতিগত সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন চলে আসছে। আর ৭০ বছর আগে কারেন জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের বিপ্লবীরা এ আন্দোলন শুরু করে। সেই থেকে শুরু করে আজ অবধি ৫০টি বিদ্রোহীগোষ্ঠী মিয়ানমারে লড়াই করে চলেছে। এগুলোর মধ্যে কারেন সম্প্রদায় অন্যতম।

বিশ্বজুড়ে কয়েক ডজন কারেন সংগঠন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালত (আইসিজে) ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) দায়ের করা গণহত্যা মামলার প্রশংসা করেছে।

বিশ্বব্যাপী কারেন সম্প্রদায়ের সংগঠনের অধীনে ৪৮টি দল বলেছে, সামরিক বাহিনী দ্বারা নিয়মিতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হওয়া লোকদের পাশে এক কাতারে কারেন মানুষ দাঁড়িয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এসব মামলা মিয়ানমার আর্মি নেতৃত্বের কাছে স্পষ্ট সংকেত দিয়েছে যে মিয়ানমারে ন্যায়বিচার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং দেশটির সমস্ত জাতিগত জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধ করায় তাদের দায়মুক্তির দিন গণনা শেষ হতে যাচ্ছে।
কারেন জাতিগোষ্ঠী মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭ শতাংশ, প্রায় ৫০ লাখ মানুষ নিয়ে গঠিত। তাদের বেশিরভাগই কায়িন রাজ্যের পাশাপাশি দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বাস করে।

কয়েক হাজার কারেন তাদের বাড়িঘর ছেড়ে শরণার্থী শিবিরগুলোতে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। অনেকে সেনা এবং কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের মতো কিছু কারেন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে কয়েক দশক ধরে সশস্ত্র সংঘর্ষের মধ্যে অন্য দেশে পালিয়ে গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক অনুমোদনসহ আরও বেশি চাপ দেওয়া জরুরি, যাতে সারাদেশে মিয়ানমার সেনাবাহিনী আক্রমণ বন্ধ করে। তারপরেই নিজেদের মধ্যে সংলাপ শুরু করা উচিত।

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার শুনানির জন্য ১০ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রথম ধাপে ১০ ডিসেম্বর শুনানি করবে গাম্বিয়া। আর ১১ ডিসেম্বর শুনানি করবে মিয়ানমার। দ্বিতীয় ধাপে উভয় দেশই শুনানিতে অংশ নেবে। আর এ শুনানি সরাসরি প্রচার হবে।

আফ্রিকার মুসলিম রাষ্ট্র গাম্বিয়া গত ১১ নভেম্বর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং জেনোসাইড কনভেনশন ভঙ্গের অভিযোগে আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে।

এদিকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)৷ পূর্ণ তদন্ত শুরুর জন্য আইসিসির কৌঁসুলি ফাতু বেনসুদার একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৪ নভেম্বর এই অনুমোদন দেয়া হয়৷

তবে মিয়ানমার বলছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের এ উদ্যোগ কোনোভাবেই আইনসঙ্গত নয়৷ কারণ মিয়ানমার এখনও আইসিসি সনদে স্বাক্ষর করেনি, তাই দেশটি এ ট্রাইব্যুনালের সদস্যও নয়৷ কিন্তু আইসিসি বলছে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া বাংলাদেশ সংস্থাটির সদস্য হওয়ায় এ তদন্তের এখতিয়ার তাদের রয়েছে৷

এসএইচ-১৯/০৪/১৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)