২০১৯ সালে কাশ্মীরে ২৩৯ প্রাণহানি

নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ৫ আগস্ট ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিলের পর গত পাঁচ মাসে উপত্যকায় অন্তত ৬৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি করেছে স্থানীয় একটি মানবাধিকার সংগঠন। এছাড়া ২০১৯ সালে সব মিলিয়ে কাশ্মীরে ২৩৯ জন নিহত হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত এক বছরে অবরুদ্ধ কাশ্মীর উপত্যকায় মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর কোয়ালিশন অব সিভিল সোসাইটি বা জেকেসিসিএস। এই হিসাব তারাই দিয়েছে।

জেকেসিসিএস-এর দেয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে হামলা-বিষ্ফোরণ-গুলিসহ নানাভাবে ৮০ জন বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া ১৫৯ জন অস্ত্রধারীর পাশাপাশি ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২৯ জওয়ান নিহত হয়েছেন। নিহত বেসামরিক নাগরিকের মধ্যে ১২ জন নারী।

মঙ্গলবার জম্মু-কাশ্মীরের স্থানীয় ওই মানবাধিকার সংগঠনটির প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, বছরজুড়ে কাশ্মীরে নিহতদের মধ্যে পর গত পাঁচ মাসে ৩৩ বেসামরিক নাগরিকসহ নিহতের সংখ্যা অন্তত ৬৯ জন। এরমধ্যে শুধু অক্টোবরেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ জন নিরাপরাধ মানুষ। এছাড়া আহতের সংখ্যা অগণিত।

গত বছরের ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি সরকার। সিদ্ধান্ত কার্যকরে বিশ্বের সবচেয়ে সামরিকায়িত এলাকাটিতে পাঠানো হয় অতিরিক্ত ৫০ হাজার সেনা। সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় কাশ্মীরকে। যা এখনো চলমান।

বিশেষ মর্যাদার বাতিলের প্রতিবাদে কারফিউ ভেঙে কাশ্মীরিরা রাস্তায় বিক্ষোভে নামলে সেখানে মোতায়েন ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে বেশ কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটে। এছাড়া সাধারণ কাশ্মীরিদের ওপর দমন-পীড়ন-নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে।

২০১৯ সালে কাশ্মীরে ব্যাপক হতাহতের শুরু ১৪ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন এক হামলায় ভারতের সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) অন্তত ৪০ জন সদস্য নিহত হন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতীয় বাহিনীর ওপর এটাই সবচেয়ে বড় হামলা। এরপর বিশেষ মর্যাদা বাতিলসহ নানা কারণে বছরজুড়ে কাশ্মীর ছিল এক মৃত্যু উপত্যকা।

এসএইচ-২২/০১/২০ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)