দিল্লিতে অবস্থিত জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনবিরোধী (সিএএ) প্রতিবাদ মিছিল লক্ষ্য করে গুলির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার মহাত্মা গান্ধীর ৭২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রাজঘাটের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন মিছিল লক্ষ্য করে গুলি করেন এক যুবক।
ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভি ও কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা যখন রাজঘাটের উদ্দেশে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলেন তখন অনেক পুলিশের চোখের সামনেই ‘ইয়ে লো আজাদি’ (এই নে তোর স্বাধীনতা) বলে মিছিল লক্ষ্য করে গুলি চালান এক অস্ত্রধারী। গুলি লেগে এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
ঘটনার জন্য দিল্লি পুলিশকে দায়ী করছে বিক্ষোভকারীরা। তাদের অভিযোগ, মিছিলে সহিংসতা ঠেকাতে ক্যাম্পাসের বাইরে পুলিশ মোতায়েন ছিল। বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে ব্যারিকেড দেয়া হয়। কিন্তু তা না মেনে বিক্ষোভকারীরা সড়কে বসে পড়েন। তখন পুলিশের সামনে মিছিলের একেবারে সামনে এসে একজন গুলি চালান।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, অস্ত্রধারীকে বাধা দেওয়ার বদলে পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের নীরবতার কারণে আন্দোলনকারীরাই অভিযুক্তকে ঘিরে তাকে আটক করেন। তারপর পুলিশ ওই তাকে গ্রেফতার করে। অস্ত্রধারী যুবকের গুলিতে এক শিক্ষার্থী আহত হলে সেখানে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়।
ঘটনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ব্যারিকেডের সামনে ফাঁকা রাস্তায় পিস্তল হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক যুবক। তার পরনে সাদা রঙের ট্রাউজার ও কালো জ্যাকেট। বন্দুক উঁচিয়ে বিক্ষোভকারীদের বলছেন, ‘কিসকো আজাদি চাহিয়ে? ম্যায় দুঙ্গা আজাদি। ইয়ে লো আজাদি।’
এনডিটিভি বলছে, ঘটনার পর গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। নিরাপত্তার জন্য সেখানে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আহত শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে অল-ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সের (এমস) ট্রমা সেন্টারে। তবে এখনো অভিযুক্ত অস্ত্রধারীর পরিচয় জানা যায়নি।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, অস্ত্রধারী ওই যুবক বহিরাগত। এনডিটিভিকে জামিয়া মিলিয়ার শিক্ষার্থী আমেনা আসিফ বলেন, ‘হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালের সামনে ব্যারিকেডের কাছে আমরা বসেছিলাম। আচমকাই গুলি চালাতে শুরু করেন ওই ব্যক্তি। তবে তিনি আমাদের কেউ নন। বাইরে থেকে এসে এই কাজ করেছেন তিনি।’
এর আগে ভারতের রাজধানী দিল্লির মুসলিম অধ্যূষিত এলাকা শাহীনবাগেও গুলির ঘটনা ঘটে। সিএএবিরোধী অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ চলাকালীন গত মঙ্গলবার পিস্তল হাতে সেখানে ঢুকে পড়েন এক অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি। বন্দুক হাতে তিনিও আন্দোলনকারীদের হুমকি দেন। তবে গুলি চালানোর আগেই তাকে আটকানো হয়।
Police watch as a guy waves a gun outside Jamia University. Man says "Yeh lo azaadi." This week a minister chanted – desh ke gaddaron ko, goli Maro saalon ko. pic.twitter.com/19mfHvFcQR
— Niha Masih (@NihaMasih) January 30, 2020
এসএইচ-১৭/৩০/২০ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)