২৬ বছর পর ধরা পড়লেন মুম্বাই হামলার দুর্ধর্ষ আসামি

অবশেষে দীর্ঘ ২৬ বছর পর ধরা পড়লেন ভারতের মুম্বাইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের এক মূল অভিযুক্ত। ১৯৯৩ সালে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মুম্বাই বিমানবন্দরে রোববার রাতে পাকিস্তানের পাসপোর্টধারী ওই ব্যক্তি ধরা পড়েন গুজরাটের অ্যান্টি-টেরর স্কোয়াডের জালে।

আটক ব্যক্তির নাম মুনাফ হালারি। তিনি মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার মূল পরিকল্পনাকারী টাইগার মেমনের ঘনিষ্ট বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।

রোববার রাতে মুম্বাই এয়ারপোর্ট হয়ে দুবাই যাচ্ছিলেন মুনাফ। আর সেখানেই পুলিশের জালে ধরা পড়েন তিনি। গুজরাটের উপকূল দিয়ে হেরোইন স্মাগলিংয়ের কাজে তিনি জড়িত বলে পুলিশের কাছে আগেই অভিযোগ ছিল। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি একই অভিযোগে আরও পাঁচ পাকিস্তানি ধরা পড়ে।

মুম্বাই পুলিশের দাবি, ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ে ভয়াবহ হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন মুনাফ হালারি। কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই) অনেক আগেই তার নামে রেড নোটিস জারি করেছে। হালারি আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠজন টাইগার মেমনের সহযোগী।

তিনটি স্কুটারে বিস্ফোরক বোঝাই করে মুম্বাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থানে বিস্ফোরণ ঘটানোর হোতা ছিলেন তিনি। হামলার পরপরই তিনি প্রথমে বেরিলিতে পালিয়ে যান। সেখান থেকে যান ব্যাংককে। টাইগার মেমনের সঙ্গে সেখান থেকেই তিনি পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় পাকিস্তানি পাসপোর্ট হাতে পান। তার নতুন পরিচয় হয় মুহাম্মদ আনোয়ার নামে।

মুনাফ হালারি টাইগার মেমনের সময় সবসময়ই যোগাযোগ রাখতেন। হামলার অভিযোগ থেকে গ্রেফতার এড়াতে তিনি পাকিস্তানি নাগরিক পরিচয়ে কেনিয়ার নাইরোবিতে গিয়ে থাকতেন। সেখানে থেকে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যবসার ছদ্মবেশে ভারতে বিস্ফোরক ও মাদক পাচার করতেন তিনি।

২ জানুয়ারি ধৃত পাঁচ পাকিস্তানি মাদক কারবারি করাচির হাজি হাসানের চালান নিয়ে আসছিল বলে জানিয়েছিল। আর হাজি হাসানের টেলিফোনে মুনাফ হালারির সঙ্গে কথোপকথনের হদিস পাওয়া যায়। সেখানেই উঠে আসে গুজরাটের উপকূল দিয়ে ভারতে বিস্ফোরক ও হেরোইন পাচারের কথা।

তদন্তকারীরা সংবাদমাধ্যমকে আরও জানান, ১৯৯৩ সালে হামলার পর পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে আরও দু’বার ভারতে ঢুকেছেন মুনাফ হালারি। এর আগে সবশেষ ২০১৪ সালে তিনি মুম্বাই ভ্রমণ করেন। তবে এবার ধরা পড়লেন পুলিশের জালে। হালারি এবার মাদক চোরাচালানের অভিযোগে এবং ১৯৯৩ সালের মুম্বাই হামলায় ভূমিকার দায়ে বিচারের সম্মুখীন হবেন ভারতে।

১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ মুম্বাইয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ২৫৭ জন মানুষ প্রাণ হারায় এবং ৭১৩ জন গুরুতর আহত হয়।

এসএইচ-২২/১১/২০ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)