নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে জাতিসংঘ

গত দু’মাস ধরে আন্তর্জাতিক মহলে সিএএ-এনআরসি নিয়ে ক্রমশ চাপ বাড়ছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের উপরে। সেই চাপ বাড়িয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচআরসি বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনে ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে বাদ দেওয়ার বিরোধিতা করে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।

মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন জানায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা।

ভারত এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বিবৃতি দিয়ে জানায়, এটি একান্ত ভাবেই রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কোনো বিদেশি পক্ষের এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই।

জাতিসংঘের আবেদন সুপ্রিম কোর্ট গ্রহণ করবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে একাধিক মতামত রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। তবে আইনি প্রক্রিয়া যে পথেই এগোক না কেন, জাতিসংঘ সরাসরি এই মামলায় শামিল (ইন্টারভেনশন অ্যাপ্লিকেশন) হতে চাওয়ায় এক ধাক্কায় বিশ্বের আতসকাচের তলায় চলে এল মোদি সরকারের নতুন নাগরিকত্ব আইন।

হাই কমিশনার মিচেল বাচেলে জেরিয়া যে আবেদন সুপ্রিম কোর্টে করেছেন, সেখানে বলা হয়েছে, সিএএ-তে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান-এই প্রতিবেশী দেশগুলোতে নিপীড়নের শিকার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্য অবশ্যই প্রশংসনীয়।

একই সঙ্গে বলা হয়েছে, ধর্মের ভিত্তিতে যে ভেদাভেদ করা হচ্ছে তা যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কি না, তা দেখার বিষয়। মুসলিমরা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে এলেও ভারতে কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না। অথচ আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে শিয়া, আহমদি ও হাজারা সম্প্রদায় মুসলমান হলেও সংখ্যালঘু। তারা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন বলে মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে।

আবেদনে আরও বলা হয়, ভারতে আশ্রয় নেওয়া ওই সম্প্রদায়ভুক্তদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো হলে আবার নিপীড়নের মুখে পড়তে পারেন। এখানেই সব থেকে বড় আপত্তি জাতিসংঘের। কমিশনারের বক্তব্য, নিপীড়নের শিকার হবে জেনেও কাউকে তার দেশে ফেরত পাঠানোর উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে জাতিসংঘের। ভারত এই সনদ মানতে দায়বদ্ধ।

এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রভীশ কুমার বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সিএএ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারতের সংসদে পাশ হয়েছে এই আইন। আমরা দৃঢ় ভাবে মনে করি, কোনো বিদেশি পক্ষের ভারতের সার্বভৌমত্ব নিয়ে কথা বলার অধিকার নেই।’

এসএইচ-১৭/০৪/২০ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)