নতুন ওষুধের সন্ধান পেল গবেষকরা

ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে গবেষণা চলছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চে (আইসিএমআর)। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে এবার ইবোলার ওষুধ রেমডেসিভির নিয়েও পর্যবেক্ষণ শুরু হয়েছে বলে জানাল তারা। আরএনএ ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরির ক্ষমতাকে নষ্ট করে দিতে পারে এই অ্যান্টি-ভাইরাল ড্রাগ, ফলে শরীরের ভেতর ভাইরাস আর আড়েবহরে বেড়ে উঠতে পারে না, এমনটাই জানিয়েছে আইসিএমআর।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের এপিডেমোলজি অ্যান্ড কমিউনিকেবল ডিজিজের প্রধান রমন আর গঙ্গাখেড়কার বলেছেন, করোনাভাইরাসের বাড়বৃদ্ধি বন্ধ করতে পারে এই ওষুধ, বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন এমনটাই। দেহকোষে যদি ভাইরাল স্ট্রেন সার্স-কভ-২ এর ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে পারে এই অ্যান্টি-ভাইরাল ড্রাগ, তাহলেই রোগীর শরীরে সংক্রমণ কমতে শুরু করবে। তাই মনে করা হচ্ছে, কোভিড-১৯ ঠেকাতে এই ওষুধ কাজে লাগতে পারে। তবে এই ড্রাগ এখনই ব্যবহার করার ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি, রোগীদের উপর পর্যবেক্ষণের পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আইসিএমআর জানিয়েছে, কয়েকজন করোনা আক্রান্ত রোগীর উপরে এই ওষুধের কার্যকরি প্রভাব দেখা গেছে। সংক্রামিত তিনজন রোগীর মধ্যে দু’জনের উপরেই ৬৮% কাজ করেছে রেমডেসিভির। ওই তিন রোগীই তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তাঁদের রাখা হয়েছিল ভেন্টিলেটরে। রেমডেসিভির দেওয়ার পরে দেখা যায় তাঁদের মধ্যে দু’জনের শ্বাসের সমস্যা অনেকটাই কমেছে। আর ভেন্টিলেটরে রাখারও প্রয়োজন হয়নি।

রেমডেসিভির ড্রাগের আবিষ্কর্তা আমেরিকার জিলেড সায়েন্সেস। ২০১০ সালেই এই ড্রাগ তৈরি হয়। জিলেড সায়েন্সেস তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, সার্স ও মার্স ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে কিছুটা হলেও কাজে এসেছিল এই ড্রাগ। চারজন করোনা আক্রান্ত রোগীর উপর এই ড্রাগের প্রভাব কার্যকরী হয়েছে বলে দাবি করেছেন জিলেড সায়েন্সেসের বিজ্ঞানীরা। যদিও এখনও গবেষণার স্তরেই রাখা হয়েছে রেমডেসিভিরকে।

নিউইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে এই গবেষণার রিপোর্ট সামনে আনা হয়। ওই সায়েন্স জার্নালে বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, রেমডেসিভির ভাইরাসের বৃদ্ধি ও বিস্তার আটকাতে পারে। ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা সঙ্কটাপন্ন রোগীদের উপরেও কাজ করতে পারে এই ড্রাগ।

জিলেড সায়েন্সেসের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, রেমডেসিভির নিউক্লিওটাইড অ্যানালগ। এই ড্রাগের ফেজ-৩ ট্রায়াল হয়ে গেছে। পশুদের উপর এর প্রভাব কার্যকরী। চারজন করোনা আক্রান্ত রোগীর উপরেও এই ড্রাগ কাজ করেছে। তবে আরও বেশি ট্রায়ালের পরেই এই ড্রাগকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া যেতে পারে।

ভারতেও রেমডেসিভির নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে অন্যতম বড় ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা সিপলা। কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ-ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল টেকনোলজি এর তত্ত্বাবধানে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঠেকাতে অ্যান্টিভাইরাল তিন ড্রাগ ফ্যাভিপিরাভির, রেমডেসিভির ও বলোক্সাভির নিয়ে গবেষণা চলছে।

এসএইচ-১২/১৪/২০ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)