খুলে দেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ডের পর্যটনকেন্দ্রগুলো

অবশেষে ১৮ মাস পরে খুলে দেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ডের পর্যটনকেন্দ্রগুলো। ইতোমধ্যে যারা দুই ডোজ টিকা নিয়েছে এমন ৬০টি দেশ থেকে পর্যটকরা থাইল্যান্ডে আসতে পারবে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।

নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার প্রথম দিনেই সোমবার ১০ হাজার ভ্রমণপিপাসু পর্যটকের থাইল্যান্ড পৌঁছানোর কথা রয়েছে। থাইল্যান্ডে চলতি বছরের থেকে পর্যটক সংখ্যা দেড় কোটি বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। এতে করে পর্যটন খাতে দেশটির আয় দাঁড়াবে ৩০ বিলিয়ন ডলার। যদিও এখন পর্যন্ত বিশ্বে মাত্র ৪২ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিনের আওতাভুক্ত হয়েছে তারপরেও পর্যটনখাত সংশ্লিষ্ট দেশগুলো ইতোমধ্যে পর্যটকদের জন্য তাদের দরজা খুলে দিতে শুরু করেছে।

এখনো প্রতিদিন থাইল্যান্ডে প্রায় ১০ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছে। দেশটির ট্যুরিস্ট গাইড চাইয়াগোরং বুনিয়াপাং এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ”দুই বছর ধরে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সব বন্ধ হয়ে আছে। এখন আমরা আশার আলো দেখতে শুরু করেছি। যদিও আমরা জানি না সবকিছু পুরোপুরি কীভাবে ঠিক হবে। তবে আমরা আশাবাদী।”

করোনাভাইরাস পূর্ববর্তী সময়ে থাইল্যান্ড প্রতিবছর প্রায় ৪০ মিলিয়ন পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হতো। গত দুই বছরে এই সংখ্যা ৮০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। ইতোমধ্যে ব্যাংকক এবং ফুকেটের এয়ারপোর্টগুলোতে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। এদের সিংহভাগই যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং ইউরোপীয় দেশগুলি থেকে আগত।

থাইল্যান্ডের সরকার আশা করছে ২০২৩ সালের ভেতরে দেশটি অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে। যদিও দেশটি অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা অর্থনৈতিক সংকটের জন্য চীনের সীমান্ত বন্ধ রাখাকে দুষছে। মহামারির আগে থাইল্যান্ডে সব থেকে বেশি পর্যটক আসতো চীন থেকে। ২০১৯ সালের চীন থেকে প্রায় ১২ মিলিয়ন পর্যটক থাইল্যান্ডে আসে যা দেশটির অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।

উইয়ান শ্রিয়াসরি ব্যাংককের একজন হোটেল মালিক। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় না আমরা আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারব। পর্যটকদের আনাগোনায় আবারও নতুন করে করে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে বলে আমার শঙ্কা হচ্ছে। তখন আবার লকডাউনের মতো অবস্থায় ফিরে যেতে হবে আমাদের। আমি নিশ্চিত না, আমরা হয়তো এত জলদি আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারব না।”

একসময়ের জনবহুল পর্যটনকেন্দ্র ফুকেট করোনাসংক্রমণের সময়ে একরকমের জনশূন্য হয়ে পড়ে। ফুকেটের একজন জুস ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় করোনাপূর্ববর্তী সময়ে ২০১৯ সালে প্রতিদিন তাদের ১৫০ ডলারের মতো জুস বিক্রি হতো। এখন সেই আয় নেমে এসেছে মাত্র ৩০ ডলারে।

তবে ধারণা করা যাচ্ছে, থাইল্যান্ড স্বাস্থ্যবিধি এবং পর্যটন খাত দুটি পাশাপাশি সামলাতে পারলে অচিরেই তাদের সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।

এসএইচ-০৭/০১/২১ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)