জাতীয় সংগীতকে অসম্মান: মমতার বিরুদ্ধে আদালতের সমন জারি

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই নিচ্ছের ইচ্ছে অনুযায়ী চলতে ভালোবাসেন। মুখে তিনি যতই দেশের ঐতিহ্য বা নিয়ম মানার কথা বলুন না কেন, কার্যক্ষেত্রে তিনি অনেক সময়ই এ সবের তোয়াক্কা করেন না। যেকোনো প্রশাসনিক অনুষ্ঠানেই তিনি চলেন নিজের ইচ্ছেমতো। যখন-তখন বেরিয়ে যান। অনেক সময় কাউকে ন্যূনতম সম্মান দেখানোরও প্রয়োজন বোধ করেন না। এবার কিন্তু তিনি এই মনোভাব দেখাতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনলেন। তা-ও আবার জাতীয় সংগীত অবমাননা করার মতো বিপদ।

জাতীয় সংগীত অবমাননার দায়ে তার বিরুদ্ধে বুধবার মুম্বাইয়ের একটি আদালত সমন জারি করেছেন।

সমনে তৃণমূল সুপ্রিমোকে বলা হয়েছে, আগামী ২ মার্চের আগে আদালতে হাজিরা দিতে হবে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মুম্বাই সফরে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে সময় একটি অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত বাজানোর সময় উঠে দাঁড়াননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই অভিযোগেই সমন জারি করা হয়েছে মমতার বিরুদ্ধে।

সমন জারি করে আদালত বলেছেন, ‘যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন মুখ্যমন্ত্রী; কিন্তু তার বিরুদ্ধে অগ্রসর হতে কোনো বাধা নেই। কারণ, তিনি সরকারি কর্তব্য পালন করেননি।’

মুম্বাই বিজেপি ইউনিটের কর্মকতা বিবেকানন্দ গুপ্তা ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মমতার বিরুদ্ধে জাতীয় সংগীত অবমাননার একটি অভিযোগ নিয়ে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করারও দাবি জানান।

মুম্বাইয়ের মাঝগাঁওয়ে নগর দায়রা আদালতের বিচারক পিআই মোকাশি এই সমন জারি করেছেন। আদালত আজ বলেছেন, ‘অভিযোগকারীর (বিবেকানন্দ গুপ্তা) সমস্ত বিবৃতি, তাঁর দেওয়া ভিডিও এবং ইউটিউব থেকে প্রাপ্ত ভিডিও ক্লিপ থেকে এটা স্পষ্ট যে, অভিযুক্ত (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় বসে ছিলেন এবং হঠাৎ করেই মঞ্চ ছেড়ে চলে যান। এটি প্রমাণ করে যে, অভিযুক্ত জাতীয় সম্মানের অবমাননা প্রতিরোধ আইন, ১৯৭১-এর ধারা ৩-এর অধীন শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।’

সেই সঙ্গে আদালত জানিয়েছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তিনি সেদিন অফিশিয়াল ডিউটি পালন করতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। তাই কোনো অনুমতি ছাড়া তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে আদালতের কোনো বাধা নেই।’

যদিও সশরীরে হাজিরা না দিয়ে আইনজীবীকে পাঠিয়েও মমতা নিজের বক্তব্য পেশ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন আদালত।

উল্লেখ্য, গত বছর মুম্বাই সফরে গিয়েছিলেন মমতা। সেখানে তিনি মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন শিবসেনা এবং জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।

অভিযোগকারী বিবেকানন্দ গুপ্ত দাবি করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০১৫ সালের আদেশ লঙ্ঘন করেছেন। এই আদেশে বলা হয়েছে, জাতীয় সংগীত বাজানো বা গাওয়ার সময় দর্শকদের অবশ্যই মনোযোগী হতে হবে।

এসএইচ-১৪/৯২/২২ (আন্তর্জাকিক ডেস্ক)