খায়রুজ্জামানকে বাংলাদেশে পাঠানো অসম্ভব: ইউএনএইচসিআর

মালয়েশিয়ায় এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির হাতে গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।

স্থানীয় সময় শনিবার স্থানীয় গণমাধ্যমে এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর।

বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দেওয়ার পর সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খায়রুজ্জামান জাতিসংঘের শরণার্থী কার্ড নিয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করা অবস্থায় তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব নয়। কারণ এটা হবে আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।

ইউএনসিএইচআর থেকে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো মেইলে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার সরকার তাকে তাদের মূল দেশে ফেরত পাঠাতে পারে না, কারণ এতে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হবে। শরণার্থী পুনর্বাসন আইন অনুযায়ী, সরকার কোনো শরণার্থীকে এমন কোনো স্থানে পাঠাতে পারে না। যেখান তার জীবন হুমকির মুখে পড়বে। শরণার্থীদের মর্যাদা সম্পর্কিত ১৯৫১ সালের কনভেনশন চুক্তি অনুযায়ী, উক্ত আইনটি সব দেশের জন্য পালন করা বাধ্যতামূলক।

এদিকে, মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ জাইনুদিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আইন মেনেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ রয়েছে এবং তাকে গ্রেফতারে বাংলাদেশ থেকে অনুরোধ ছিল।

বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে এম খায়রুজ্জামানকে বুধবার মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যের আমপাং এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মালয়েশিয়ায় তিনি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছেন।

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান ১৯৭৫ সালের জেল হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন এবং পরে খালাস পান। খালাস পাওয়ার পর ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৭ সালের আগস্ট পর্যন্ত মিয়ানমারের হাইকমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন।

ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে খায়রুজ্জামানকে ঢাকায় ফিরতে আহ্বান জানান এবং পরবর্তীতে তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাতিল করা হয়।

খায়রুজ্জামান তার জীবনের ঝুঁকি অনুমান করে তিনি কুয়ালালামপুরে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) কাছে যান এবং মালয়েশিয়ায় তার অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি পরিচয়পত্র পান।

এদিকে দেশটির আইনজীবী এম রামাচেলভম বলেন, প্রত্যর্পণ আইনের অধীনে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তা ১৯৯২ সালের প্রত্যর্পণ আইনের অধীনে কঠোর প্রয়োজনীয়তা মেনে চলতে হবে এবং সাবেক দূতের ক্ষেত্রে শরণার্থী হিসেবে তাকে তার দেশে ফেরত পাঠানো যাবে না। প্রান্তিককরণের কারণে যদি কোনও ব্যক্তি তার জীবন বা স্বাধীনতার জন্য হুমকির মুখোমুখি হন তবে সরকারের তাকে ফেরত পাঠানো উচিত নয়।

এসএইচ-২৮/১২/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)