পাকিস্তানি ছাত্রীকে সীমান্তে পৌঁছে দিলেন ভারতীয় তরুণ

প্রাণ ভয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন ছেড়ে হাজার হাজার ভারতীয় পড়ুয়ারা যখন হাঙ্গেরি বা রোমানিয়া সীমান্তে পৌঁছাচ্ছেন। সেই সময় জীবন বাজি রেখে এক পাকিস্তানি তরুণীকে কিয়েভ থেকে রোমানিয়া সীমান্তে পৌঁছে দিলেন ভারতীয় তরুণ অঙ্কিত যাদব।

সংবাদসংস্থাকে অঙ্কিত বলেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক বাঙ্কারে ওর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। ওই বাঙ্কারে আমি ছিলাম একমাত্র ভারতীয়। আর ওই তরুণী ছিল একমাত্র পাকিস্তানি নাগরিক। বাকীরা সবাই ছিলেন ইউক্রেনের বাসিন্দা। কিভাবে দেশে ফিরবো তা নিয়ে আমরা দুজনই তখন দিশেহারা। ভাষার সমস্যার কারণে আমরা দুজনই বাকীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছিলাম না। এদিকে দিন দিন আতঙ্ক বাড়ছে। ঠিক করলাম কিয়েভ ছাড়তে হবে আমাদের। ২৬ ফেব্রুয়ারি একবার কিয়েভ ছাড়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কারফিউ থাকার জন্য আমাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি।

দিল্লি বিমানবন্দরে সেইসব দিনের আতঙ্কের কথা জানাচ্ছিলেন অঙ্কিত।

তিনি আরো বলেন, রুশ বাহিনীর টানা বোমা বর্ষণের জন্য আমাদের কাউকেই বাঙ্কার ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছিল না। এদিকে খাবারের সমস্যাও হচ্ছিল। এর মধ্যেই গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নেজাল স্প্রে কেনার জন্য আমাকে বাঙ্কার ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হল। সেই সুযোগে আমি হোস্টেলে ফিরে আমাদের ২ জনের জন্য খাবার রান্না করে নিয়ে এলাম। খাবারে টানা পড়ে যাচ্ছিল। ২৭ তারিখ রাতে শুধুমাত্র ভাত খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লাম।

অঙ্কিত যাদব বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি কার্ফু তুলে নেওয়া হয়। ওই সময়েই পাকিস্তানি দূতাবাস থেকে ওই ছাত্রীর মোবাইলে একটি ফোন এল। ওই তরুণী দূতাবাস অফিসারকে জানায় তার সঙ্গে পাকিস্তানের কেউ নেই। সেই সময় পাকিস্তানি দূতাবাসের অফিসার আমাকে অনুরোধ করলেন আমি যেন ওই তরুণীকে সীমান্তে পৌঁছে দিই। ওই কথা শুনে তাকে নিয়ে ৫ কিলোমিটার হেঁটে এক ট্রেন স্টেশনে পৌঁছাই। কিন্তু ট্রেনে এত ভিড় ছিল যে উঠতেই পারিনি। সৌভাগ্যবশত একটা ট্রেনে শেষপর্যন্ত জায়গা পেয়ে যাই। কিন্তু তাতে কোনো সিটই খালি ছিল না। বাধ্য হয়েই আমরা মেঝেতেই বসে পড়ি। ওইভাবেই আমরা রোমানিয়ার দিকে যাত্রা করি।

এদিকে ট্রেনে উঠে ওই তরুণী পাকিস্তানি দূতাবাসে ফোন করেন। তারাই একটি ট্যাক্সি ও বাসের ব্যবস্থা করে ওই তরুণীকে রোমানিয়া সীমান্তে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। সেখান থেকেই পাকিস্তানি বিমান ধরেন ওই তরুণী।

এসএইচ-৩০/০৬/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)