মাহিন্দা রাজাপাকসে ও সহযোগীদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

শ্রীলঙ্কার সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ও তার সহযোগীদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক নির্দেশনায় মাহিন্দা রাজাপাকসে, তার ছেলে নামাল রাজাপাকসে ও তার অন্তত ১৫ জন ঘনিষ্ঠ সহযোগীর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।

মাহিন্দা বর্তমানে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিঙ্কোমালি শহরের নৌঘাঁটিতে সেনা হেফাজতে রয়েছেন। দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভের মুখে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। কিন্তু এরপরও জনরোষ একটুও কমেনি।

ওইদিন রাতেই কলম্বোয় রাজাপাকসের বাসভবনের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন হাজারো বিক্ষোভকারী। এর ফলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আটকা পড়েন মাহিন্দা। পরদিন মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোটার আগেই সেনা পাহারায় হেলিকপ্টারে করে সপরিবারে সরকারি বাসভবন ছাড়েন মাহিন্দা। আশ্রয় নেন ত্রিঙ্কোমালি শহরের নৌঘাঁটিতে।

বুধবার মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানান শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষাসচিব কমল গুণারত্নে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী যেখানে যেতে চান, সেখানে তাকে সরিয়ে নেওয়া হবে।

এরপর মাহিন্দা পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার অনুষ্ঠিত একাধিক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে হামলার ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে। চলমান এই তদন্তের কারণেই এ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ফোর্ট ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট।

গত সোমবার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর সংঘবদ্ধ হামলার ঘটনা তদন্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন রাজধানী কলম্বোর একটি আদালত। ওই হামলার জেরে অন্তত নয়জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ২০০ জন।

আদালতের এক কর্মকর্তা জানান, ওই ঘটনায় মাহিন্দা রাজাপাকসে এবং তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবিতে আদালতে আবেদন জানানো হয়। তবে বিচারক ওই আবেদন বাতিল করে দেন।

শ্রীলঙ্কায় গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ চলছে। গত সোমবারের বিক্ষোভও শান্তিপূর্ণই ছিল। কিন্তু মাহিন্দা রাজাপাকসে ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা বাসে করে প্রায় তিন হাজার সমর্থক রাজধানীতে নিয়ে আসেন। এরপর শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালাতে উসকানি দেন।

সরকার সমর্থকরা লাঠিসোঁটা নিয়ে রাজাপাকসের বাড়ির বাইরে সমবেত বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলে পড়েন। হামলার পর অন্তত ২২৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলার জেরে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজাপাকসে অনুগত নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

এসএইচ-২১/১২/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)