ফ্রান্সের পর ইতালি-স্পেনের কূটনীতিক বহিষ্কার

ফ্রান্সের পর ইউরোপের আরও দুই দেশ ইতালি ও স্পেনের ৫১ কূটনীতিক বহিষ্কার করেছে রাশিয়া। রুশ কূটনীতিকদের ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে বহিষ্কারের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে মস্কো। বুধবার  রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে পৃথক এক ঘোষণায় ফ্রান্সের ৩৪ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে রাশিয়া। খবর আল-জাজিরার।

গত এপ্রিলে মাদ্রিদে রুশ দূতাবাস থেকে রাশিয়ার ২৫ কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘোষণা দেয় স্পেন। প্রায় একই সময় রুশ কূটনীতিক বহিষ্কার করে ইতালিও।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ইতালির ২৪ ও স্পেনের ২৭ কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কারের বদলা হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মস্কোর স্প্যানিশ দূতাবাসের ২৭ কর্মী ও সেন্ট পিটার্সবার্গে স্প্যানিশ কনস্যুলেট জেনারেলকে ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা জানান, ইতালির ২৪ কূটনীতিককেও দেশ ছাড়তে বলা হয়েছে। এদিকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের বহিষ্কারের নিন্দা জানিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি। একে ‘শত্রুতাপূর্ণ কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এর প্রতিক্রিয়ায় মস্কোর বিরুদ্ধে একের পর এক শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয় পশ্চিমা দেশগুলো। এসব পদক্ষেপের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কার।

এরই ধারাবাহিকতায় গত এপ্রিলে রাশিয়ার অন্তত ৩৫ জন কূটনীতিক বহিষ্কার করে ফ্রান্স। এরপর দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাশিয়ার আরও ছয় কূটনীতিককে ‘গুপ্তচর’ আখ্যা দিয়ে তাদের ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ তথা অবাঞ্চিত ঘোষণা করে।

একই সময়ে ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে ৩ শতাধিক রুশ কূটনীতিককে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। তবে দেরিতে হলেও প্যারিসের ওই পদক্ষেপের প্রতিশোধ নিল মস্কো।

এর আগে মঙ্গলবার (১৭ মে) ফিনল্যান্ডের দুই কূটনীতিককে বহিষ্কার করে রাশিয়া। ফিনল্যান্ডে রাশিয়ার দূতাবাসের দুজন কূটনীতিক বহিষ্কার করার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দুই ফিনিশ কূটনীতিক বহিষ্কার করা হয়।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ফিনল্যান্ড সরকারের কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দূতাবাসের ওই দুজন কর্মকর্তার রাশিয়ায় থাকার অধিকার নেই।

ইউক্রেন অভিযানের পর থেকেই প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘটনা ঘটছে। গত সপ্তাহেই রোমানিয়ার ১০ রুশ কূটনীতিক বহিষ্কারের প্রতিক্রিয়ায় দেশটির ১০ কূটনীতিক বহিষ্কার করে রাশিয়া।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে যুদ্ধাপরাধী প্রমাণ করতে চাচ্ছে রোমানিয়া। তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে। পৃথক এক বিবৃতিতে বলা হয়, বুলগেরিয়া দূতাবাসের এক কূটনীতিককেও বহিষ্কার করা হচ্ছে।

এদিকে ইউক্রেনের বন্দরনগরী মারিউপোলের অবরুদ্ধ আজভস্তাল স্টিল কারখানায় আটকে পড়া প্রায় এক হাজার যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া।

বুধবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও আজভ ব্যাটালিয়নের ৬৯৪ জন যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছে। এর আগে আরও বেশ কিছু সেনা আত্মসমর্পণ করে। এ নিয়ে মোট ৯৫৯ জন আজভ যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছে বলে জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

এসএইচ-১৮/১৮/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)