সমুদ্রে আত্মগোপনে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট

নৌবাহিনীর একটি জাহাজে সমুদ্রে আত্মগোপনে রয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। জাহাজটি বর্তমানে দেশটির সমুদ্রসীমার ভেতরে কোনো একটি এলাকায় রয়েছে। প্রবল বিক্ষোভের মুখে দেশটির সাধারণ জনতা তার সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়লে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তিনি। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

গোতাবায়ার পদত্যাগের দাবিতে শনিবার (৯ জুলাই) শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা সব বাধা ভেঙে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়েন। নিরাপত্তা শঙ্কায় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়াকে আগেই সেখান থেকে অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।

বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ না করা পর্যন্ত ভবনটি দখল করে রাখার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনো তারা ভবনে অবস্থান করছিলেন।

প্রাথমিকভাবে শোনা গিয়েছিল, তিনি সামরিক বাহিনীর সদর দফতরে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু পরে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সূত্রের কাছ থেকে তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় বিবিসি।

প্রবল জনরোষ ও বিক্ষোভের মুখে গত মে মাসে মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেও গোতাবায়া এত দিন নিজের পদে অনড় ছিলেন।

এদিকে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থেকে বের হয়ে আসতে শ্রীলঙ্কায় একটি সর্বদলীয় অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বিরোধী দলগুলো। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের পদত্যাগের ঘোষণার পর রোববার এক বৈঠকে ওই ঐকমত্যে পৌঁছান বিরোধী নেতারা।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি বিলাসবহুল বাসভবন থাকলেও সেখানে নিয়মিত থাকতেন না শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট। তিনি সাধারণত ঘুমাতেন প্রেসিডেন্টের বাসভবনের কাছেই ছোট একটি বাসায়।

প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেও প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ব্যবহার করতেন কেবল দাফতরিক কিংবা সরকারি কাজে। নিজের পরিবারসহ কলম্বোর একটি বেসরকারি বাসভবনে থাকেন তিনি।

কয়েক মাসের বিক্ষোভ আর বিশৃঙ্খলার পর শ্রীলঙ্কার রাজপথ এখন অপেক্ষাকৃত শান্ত। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পলায়ন আর প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে সরকারের পতনে দেশজুড়ে চলছে আনন্দ-উল্লাস। এখন নতুন একটি সরকারের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে জনগণ। তাদের প্রত্যাশা: জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক নতুন সরকারের হাত ধরে দেশে সত্যিকার পরিবর্তন আসবে।

নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় কয়েক মাস ধরেই বিক্ষোভ চলছে। দেশের বর্তমান অবস্থার জন্য রাজাপাকসে সরকারের অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করে জনগণ। আর এ জন্য সরকার পতনের দাবিতে গত মার্চ মাসে বিক্ষোভ শুরু হয়।

এসএইচ-০১/১১/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)