পি কে হালদারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে ভারতের আদালতে। সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এ অভিযোগপত্র দাখিল করে।

গ্রেফতারের প্রায় ৬০ দিনের মাথায় এদিন কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিশেষ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)- ১ আদালতে প্রাথমিক চার্জশিট দাখিল করেন ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী।

এ সময় অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, পি কে হালদারসহ মোট ছয় আসামির বিরুদ্ধে অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে অভিযোগপত্র গঠন করে কলকাতার আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। তবে নতুন কোনো ধারায় এখনো তাদের অভিযুক্ত করা হয়নি।

অরিজিৎ আরও জানান, প্রাথমিক অভিযোগপত্রে প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং আইনে করা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে। ওই আইনের তিন নম্বর ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তরা ছাড়াও তাদের দুটি সংস্থার নাম এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইডির আইনজীবী আরও বলেন, এ মামলার আওতায় ভারতে এখন পর্যন্ত ৪১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বাড়ি-জমি মিলিয়ে ১৮টি স্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকা। আগামী শুক্রবার (১৫ জুলাই) আবারও তাদের আদালতে নেয়া হবে।

অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, একাধিক ভুয়া কোম্পানির মাধ্যমে ভারতে বিনিয়োগ করেছিলেন পি কে হালদার ও তার সহযোগীরা। কোম্পানির পরিচালক হিসেবে উঠে এসেছিল প্রায় ৫৫ জন প্রভাবশালী বাংলাদেশির নাম। যদিও গত ৫ জুলাই শুনানির শেষ দিন ইডির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ভারতে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে করা মামলায় তদন্তের বাইরে রাখা হবে আলোচিত বাংলাদেশিদের নাম।

এদিন আসামিপক্ষের আইনজীবী শেখ আলী হায়দার বলেন, এ অভিযোগপত্র গঠনের ফলে আমার মক্কেলদের জামিন পেতে আরও বেশি সময় লাগতে পারে। অভিযোগপত্রের অনুলিপি আমার হাতে এখনো আসেনি, এলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।

বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা পি কে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীকে গত ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থেকে গ্রেফতার করে ইডি।

পুকুর চুরি নয়, রীতিমতো সাগর চুরি করেছেন পি কে হালদার। ফতুর করেছেন বাংলাদেশের ব্যাংকবহির্ভূত চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে। লুট করা হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। নানা কৌশলে সাধারণ মানুষের আমানত লুট করে পালিয়ে গেছেন দেশের বাইরে।

কানাডা-ভারতসহ নানা স্থানে পালিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি এ জালিয়াতের। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুরোধে চলতি বছরের মে মাসে তাকে গ্রেফতার করে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

পশ্চিমবঙ্গে পৃথক ৯টি স্থানে একযোগে অভিযান চালিয়ে পি কে ছাড়াও তার অপকর্মের অন্যতম সহযোগী ছোট ছাই প্রীতিশ কুমার হালদার ও প্রাণেশ কুমার হালদারকেও আটক করা হয়।

এসএইচ-১১/১৩/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)