৭ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নেবে শ্রীলঙ্কা

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের সমর্থনে (পপুলার ভোট) নয়, পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোটেই নির্বাচিত হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। আগামী সাত দিনের মধ্যেই নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নেয়া বলে জানিয়েছেন স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেওয়ার্দেনা।

অনেক নাটকীয়তার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে ইস্তফা দেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। শুক্রবার তার পদত্যাগপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করার কথা ঘোষণা করেন স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেওয়ার্দেনা। একই সঙ্গে তিনি জানান, আগামী সাতদিনের মধ্যেই বেছে নেয়া হবে নতুন প্রেসিডেন্ট। শনিবার ফের সংসদের অধিবেশন হবে বলেও জানান তিনি।

২০ জুলাই এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। স্পিকার আবেওয়ার্দেনা আরও জানিয়েছেন, ২২৫ জন পার্লামেন্ট সদস্যের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। প্রেসিডেন্টের পদ দখলের লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত চার জনের নাম শোনা গেছে।

তারা হলেন, প্রধানমন্ত্রী ও ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে, পার্লামেন্টের বিরোধী দলনেতা সাজিথ প্রেমাদাসা, প্রবীণ সাংবাদিক থেকে পার্লামেন্ট সদস্য ডলাস অলহাপেরুমনা ও সাবেক সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল শরৎ ফনসেকা।

সাধারণত শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেন দেশটির প্রত্যেক নাগরিক। কিন্তু এত কম সময়ের মধ্যে সেই আয়োজন অসম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। তাই পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোটের ভিত্তিতেই অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে সর্বদলীয় বৈঠকে।

২২৫ সদস্যের শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্টে রাজাপক্ষের দল শ্রীলঙ্কা পদুজনা পেরামুনার (এসএলপিপি) সদস্য সংখ্যা ১০০। প্রধানমন্ত্রী রনিলের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) মাত্র ১ আর ইপিডিপির ২ সদস্য রয়েছেন। ছয়বারের প্রধানমন্ত্রী রনিল এদের বড় অংশের সমর্থন পেতে পারেন।

অন্যদিকে সাজিথের দল সামাগি জানা বালাওয়েগার (এসজেবি) ৫৪ জন সদস্য রয়েছেন। বৃহত্তম তামিল দল টিএনএর ১০ সদস্যের সমর্থনও তার পাশে রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অন্য ছোট ছোট দল ও ৪৫ জন নির্দলীয় সদস্যের সমর্থন তার জন্য নির্ণায়ক ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

ক্ষমতাসীন শিবিরে অন্তর্কলহের জেরে এসজেবি নেতা সাজিথ প্রেসিডেন্ট ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে যেতে পারেন বলেও অনেকে মনে করছেন। সাজিথের বাবাও রনসিংহে প্রেমাদাসাও শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। দায়িত্ব পালনকালে ১৯৯৩ সালে তামিল বিদ্রোহী গোষ্ঠী এলটিটিইর আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হন তিনি।

রনিল ও সাজিথ দীর্ঘ দিন রাজনৈতিক সহযোগী ছিলেন। রনিলের সরকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রীও হয়েছিলেন সাজিথ। ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ভোটে রনিলের দল ইউএনপির প্রার্থী হিসেবে লড়ে গোতাবায়ার কাছে হেরে যান তিনি।

৫২.২৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জেতেন গোতাবায়া। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিথ ৪১.৯৯ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর ভোটের ব্যবধান ছিল প্রায় ১৩ লাখ।

গত বছরের পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে ইউএনপি ছেড়ে নয়া দল এসজেবি গড়েন সাজিথ। ভোটে শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্টের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হয় এসজেবি। অন্যদিকে মাত্র একটি আসনে জেতে রনিলের ইউএনপি।

এসএইচ-০৩/১৫/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)