খরা-অনাবৃষ্টিতে কমে যাচ্ছে রাইন নদীর পানি

খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে জার্মানিতে ভূপৃষ্ঠের পানির পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে। এরই মধ্যে দেশটির দীর্ঘতম নদী রাইন নদীর পানি আশংকাজনকহারে কমে গেছে। ফলে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছে চ্যান্সেলর ওলাফ শলজের প্রশাসন।

যেকোনো দেশের জন্য নদী মানেই প্রকৃতির এক অকৃত্রিম আশীর্বাদ। যে দেশের নদীতে যত বেশি পানি সে দেশের মাটি ততই উর্বর, অর্থনীতি তত সমৃদ্ধ। জার্মানির জন্য রাইন ঠিক তেমনই। নদীটির উৎপত্তি প্রতিবেশী দেশ সুইজারল্যান্ডে আর গন্তব্য নেদারল্যান্ডসে। কিন্তু তার আগে জার্মানির মধ্যদিয়ে প্রায় ৮৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ জনপদ পাড়ি দিয়েছে। সমৃদ্ধ করে চলেছে দিনের পর দিন।

কিন্তু বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়া আর উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে জার্মানির ভূপৃষ্ঠের পানির স্তর আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ নদী রাইনে পানি স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। কমে গেছে নাব্যতাও।

ফলে দুশ্চিতায় পড়েছে জার্মান নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। বিশেষ করে নৌপথে বিভিন্ন দেশ থেকে জ্বালানি তেল, গ্যাস, কয়লা, খাদ্যশস্যসহ বিভিন্ন পণ্যের আমদানি-রফতানি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তারা।

টিম আলেক্সান্ডার নামে এক কর্মকর্তা বলছেন, ‘কোবলেঞ্জ আর মাইনজ অঞ্চলে রাইন নদীতে সাধারণত যে পরিমাণ পানি প্রবাহিত হয়, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সে পরিমাণ পানি দেখতে পাচ্ছি না। পানির বর্তমান স্তর ১৬ ইঞ্চির কম।’

টিম আরও বলেন, ‘একে তো শুষ্ক মৌসুম, তার ওপর নেই বৃষ্টি। দিনে দিনে কমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও। এটা নদীর জন্য তো বটেই আমাদের সবার জন্য কোনোভাবেই মঙ্গলজনক বিষয় নয়।’ দেশটির ব্যবসায়ীদের কণ্ঠেও উদ্বেগের সুর। তারা বলছেন, রাইন নদীতে পানি কমে যাওয়া মানে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়া যা ব্যবসার জন্য বিশাল ক্ষতি।

যেমনটা বলছেন রাইন কার্গোর কর্মকর্তা ক্রিস্টিয়ান লরেঞ্জ। তিনি জানান, খুব আশ্চর্যজনকভাবে নদীর পানি কমে গেছে। এভাবে পানির প্রবাহ কমতে থাকলে পন্য আমদানি ও খালাসে জটিলতা দেখা দেবে। যা ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মুখে ফেলে দেবে।

তবে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, অপরিকল্পিত পানি উত্তোলন ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই পর্যাপ্ত পানির প্রবাহ নেই। তাই জটিলতা এড়াতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নৌপথের পরিবর্তে স্থল কিংবা রেলপথে পণ্য আমদানি কিংবা রফতানির আহবান দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয়ের।

এসএইচ-২১/১১/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)