চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার

এবার চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিল রাশিয়া। অভ্যন্তরীণ বাজার স্তিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ‘অস্থায়ীভাবে’ এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। শনিবার এ খবর জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি।

খবরে বলা হয়েছে, গত বুধবার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে চাল রফতানি চলতি বছরের শেষ নাগাদ বাতিল করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ধান ও প্রক্রিয়াকৃত চাল রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। চলতি ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

প্রতিবেদন মতে, উল্লিখিত সময়ের মধ্যে কয়েকটা দেশ বাদে বিশ্বের প্রায় সব দেশের চাল রফতানি বন্ধ থাকবে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইউরোশিয়ান ইকনোমিক ইউনিয়নভুক্ত দেশ আর্মেনিয়া, বেলারুস, কাজাখস্তান ও কিরগিজস্তানের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।

তবে মানবিক বা ত্রাণ সহায়তার জন্য বিদেশে চাল সরবরাহ করা যাবে বলে জানানো হয়েছে। এর আগে গত ২০ জুলাই চাল রফতানি নিষিদ্ধ করেছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ চাল রফতানিকারক দেশ ভারত।

এ ব্যাপারে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ বাড়াতে এবং আসন্ন উৎসব মৌসুমে চালের খুচরা দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাসমতী ছাড়া অন্য সব ধরনের চাল রফতানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।

এদিকে এই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলেছে, ভারতের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব ফেলবে।

চলতি সপ্তাহে আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ পিয়েরে-অলিভিয়ের গৌরিঞ্চাস বলেছেন, বর্তমান পরিবেশে, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা বিশ্বের বিভিন্ন অংশে খাদ্যের দামের অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ ধরনের রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়ে উৎসাহিত করব। কারণ, এটা বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলবে।’

২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারত ৪ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারের চাল (বাসমতী ছাড়া অন্য সব ধরনের সাদা চাল) রফতানি করেছে, যার পরিমাণ এর আগের বছর ছিল ২ দশমিক ৬২ মিলিয়ন ডলার। ভারতের চালের বড় ক্রেতা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, ইতালি, স্পেন ও শ্রীলঙ্কা।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতের উত্তরাঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে পাঞ্জাব ও হরিয়ানাসহ কয়েকটি রাজ্যের নতুন রোপণ করা ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে অনেক এলাকার কৃষককে পুনরায় ধান রোপণ করতে হয়েছে। এতে উৎপাদন ঘাটতির আশঙ্কায় চাল রফতানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত।

তবে খাদ্য নিরাপত্তার চাহিদা মেটাতে অন্যান্য দেশকে সরকারের প্রদত্ত অনুমতির ভিত্তিতে এবং তাদের সরকারের অনুরোধের ভিত্তিতে রফতানির অনুমতি দেয়া হবে বলে আরেকটি প্রতিবেদনে জানিয়েছিল এনডিটিভি।

এসএইচ-০৮/২৯/২৩ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)