বরখাস্ত হলেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যান

যুক্তরাজ্যের ফিলিস্তিনপন্থী মিছিলকারীদের প্রতি বিষোদ্গার করে দৈনিক পত্রিকায় কলাম লেখার কয়েক দিনের মধ্যেেই চাকরিচ্যুত হলেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যান। সোমবার তাকে মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।

যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সুনাক তার সামনে দু’টি বিকল্প রেখেছিলেন— হয় তিনি (সুয়েলা) নিজে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন, নয়তো দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুনাক নিজে তাকে অব্যাহতি দিয়ে নোটিশ জারি করবেন। সুয়েলা প্রথম বিকল্পটি বেছে নিয়েছেন।

যে কলামের কারণে সুয়েলাকে মন্ত্রিত্ব হারাতে হলো, সেটি প্রকাশিত হয়েছিল গত সপ্তাহে। গত চার নভেম্বর শনিবার রাজধানী লন্ডনে বিশাল মিছিল করেছিলেন ব্রিটেনের ফিলিস্তিনপন্থীরা। সেই মিছিলে ইহুদিদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য-স্লোগান দেওয়া এবং জিহাদের আহ্বান জানানর অভিযোগে প্রায় ১৪০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ওই ঘটনার পরের দিন একটি কলাম লেখেন সুয়েল্লা ব্রাভারম্যান। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সেই কলামে ফিলিস্তিনপন্থী মিছিলকারীদের ‘ঘৃণা প্রচারকারী’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘গতকাল লন্ডনে প্রতিবাদ মিছিলের নামে যে পরিমাণ সহিংসতা ও আগ্রাসী মনোভাবের প্রদর্শন আমরা দেখেছি— তাতে সাধারণ শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের রক্ষার জন্য আমাদের পুলিশ সদস্যরা অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখেন।’

‘মিছিলে বিক্ষোভকারীরা যেসব স্লোগান দিয়েছেন, যেসব প্ল্যাকার্ড ও সরঞ্জাম ব্যবহার করেছেন, সেগুলোর বেশিরভাগই অসুস্থ, উসকানিমূলক এবং কিছু ক্ষেত্রে অপরাধমূলক। ইহুদিবিদ্বেষ এবং যে কোনো প্রকারের বর্ণবিদ্বেষ আসলে সন্ত্রাসবাদেরই একটি প্রকাশ এবং আমার মনে হচ্ছে একন আমাদের সম্পর্কে নতুন আইন করতে হবে।’

তার এই কলাম প্রকাশের পর সরকারি দল কনজারভেটির পার্টির বিরুদ্ধে প্রচার-প্রচারণা চালানোর নতুন ইস্যু পায় বিরোধী দল লেবার পার্টির এমপি ও নেতারা। বিভিন্ন মাধ্যমে তারা প্রচার করতে থাকেন— বর্তমান সরকার মর্মগতভাবে মুসলিমবিরোধী।

তাদের এই প্রচার-প্রচারণার প্রভাব পড়ে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ওপরও। প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও দলের অনেক নেতা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন ব্রেভারম্যানের প্রতি।

এই পরিস্থিতিতে দলে এবং দলের বাইরে শান্তি ফিরিয়ে আনতেই সুনাক চাকরি থেকে সুয়েলাকে অব্যাহতি দিয়েছেন বলে ধারণা ব্রিটেনের রাজনীতি বিশ্লেষকদের।

প্রসঙ্গত, সুয়েলা ব্রেভারম্যান এবং ঋষি সুনাক উভয়ই সমবয়সী এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত। সুনাকের বয়স ৪২ এবং ব্রেভারম্যানের ৪৩। সুনাকের পূর্বপুরুষরা পাঞ্জাব থেকে এবং সুয়েলার পূর্বপুরুষরা গোয়া থেকে যুক্তরাজ্যে গিয়ে স্থায়ী হয়েছেন।

সূত্র : এএফপি, রয়টার্স

এসএ-০৭/১১/১৩ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)