দোহায় হামাসের কার্যালয় বন্ধ করে দিতে পারে কাতার

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মাঝে চলমান যুদ্ধে মধ্যস্থতাকারী কাতার নিজেদের ভূমিকা বিশদ পরিসরে পর্যালোচনার অংশ হিসাবে দোহায় হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় বন্ধ করে দিতে পারে। কাতার সরকারের পর্যালোচনা সম্পর্কে অবগত একজন কর্মকর্তা শনিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা বলেছেন, উপসাগরীয় রাষ্ট্রটি হামাসকে দোহায় তাদের রাজনৈতিক কার্যালয়ের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেবে কি না তা বিবেচনা করছে। একই সঙ্গে সাত মাস ধরে চলা সংঘাত অবসানের লক্ষ্যে মধ্যস্থতা চালিয়ে যাবে কি না, বৃহত্তর পর্যালোচনায় সেই বিষয়েও চিন্তা-ভাবনা করছে কাতার।

এর আগে, গত মাসে কাতার জানায়, ইসরায়েল এবং হামাসের মাঝে পরোক্ষ আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী হিসাবে তাদের ভূমিকার পুনর্মূল্যায়ন করছে তারা। রাজনীতিবিদরা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নেওয়া দোহার প্রচেষ্টাকে পয়েন্ট স্কোর করতে চাওয়ায় তাদের ভূমিকার অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করে কাতার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘‘যদি কাতার মধ্যস্থতায় না থাকে তাহলে দোহায় হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় চালু রাখার কোনও মানে থাকবে না। যে কারণে এটিও পুনর্মূল্যায়নের অংশ।

তবে কাতার সরকার ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটির রাজনৈতিক কার্যালয় বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিলে হামাসকে দোহা ছেড়ে যেতে বলা হবে কি না সেই বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি ওই কর্মকর্তা।

তিনি বলেছেন, চলমান আলোচনায় ইসরায়েল এবং হামাস কীভাবে কাজ করে, তার ওপর কাতারের নিজস্ব ভূমিকার পর্যালোচনার অনেক কিছু নির্ভর করছে।

শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলেছে, হামাস যদি ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হয়, তাহলে দোহা থেকে যেন গোষ্ঠীটিকে বের করে দেওয়া হয়, সেই কথা কাতারকে জানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে, সম্ভাব্য গাজা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিতে শনিবার কায়রোতে পৌঁছেছেন হামাসের আলোচকরা। হামাসের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, নতুন করে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলে কিছু জিম্মিকে ইসরায়েলে ফেরত পাঠাবেন তারা।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজার প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

সূত্র: রয়টার্স, আল-জাজিরা।

এসএ-১০/০৫/২৪(আন্তর্জাতিক ডেস্ক)