দুধের শিশু ফিরে পেল নির্যাতিত মায়ের কোল

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে পুলিশের তৎপরতায় দুধের কন্যা শিশু মিতু ফিরে গেছে মায়ের কোলে। সোমবার রাত ৮টার দিকে ৫ মাস বয়সী শিশুটিকে তার বাবার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে তার মা সাজেদা বেগমের (২৪) কোলে তুলে দেয়া হয়েছে।

এ সময় স্বামী, শাশুড়ি আর দেবরের নির্যাতনের শিকার হয়ে চিলমারী উপজেলা হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের ২০৪ নম্বর কক্ষের মেঝেতে শুয়ে কাতরাচ্ছিলেন মা সাজেদা বেগম। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশ মিতুকে চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের রাজারভিটা গ্রামে অবস্থিত পিতা রফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে আনে।

পুলিশ এবং এলাকাবাসী জানান, প্রায় ১০ বছর আগে চিলমারী উপজেলার রাজারভিটা গ্রামের অধিবাসী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে সাজেদা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে রুমি (৭ বছর) ও মিতু (৫ মাস) ও সাড়ে ৪ বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে। রফিকুল ইসলাম নরসিংদী এলাকার একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া লেগে থাকত।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে গত ২১ মার্চ বিকেল ৪টার দিকে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়ার জেরে স্বামী, শাশুড়ি ও দেবর মিলে সাজেদা বেগমকে মারপিট করে। এতে আহত সাজেদা বেগম আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে চিলমারী উপজেলা হাসপাতালে এসে ভর্তি হন। এ সময় অন্য দুই সন্তানসহ দুধের শিশুটিকে বাড়িতে রেখে দেন স্বামী রফিকুল ইসলাম।

এ অবস্থায় শিশুটিকে বুকের দুধ পান করাতে না পেরে স্তনের ব্যথায় অস্থির হয়ে পড়েন মা সাজেদা বেগম। তখন তিনি হাসপাতালের অন্যদের সহযোগিতায় ফোন করেন ৯৯৯ নম্বরে। এরপর এখান থেকে বিষয়টি জানতে পেরে চিলমারী থানায় কর্তব্যরত এসআই আতাউর রহমান এবং এএসআই জিল্লুর রহমানসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহযোগিতায় শিশুটিকে উদ্ধার করে এনে তার মায়ের কোলে তুলে দেন।

এলাকাবাসী আরও জানান, এ সময় স্ত্রীকে হাসপাতালে ফেলে রেখে সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল স্বামী রফিকুল ইসলাম।

চিলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সবকিছু পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসএইচ-১১/২৩/২১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)