আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে, গৃহবধূ গ্রামছাড়া

কাপড় ব্যবসায়ীর লালসার শিকার এক গৃহবধূ। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে স্বামীকে তালাক, অনৈতিক কর্মকাণ্ড, অন্তরঙ্গ মুহূর্তের আপত্তিকর ছবি মোবাইলে ধারণ, মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া অতঃপর আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বাবার গ্রাম থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে এক গৃহবধূকে।

অসহায় হয়ে বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। গত ২০ দিন ধরে পার্শ্ববর্তী গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাইটকামারী গ্রামে।

বাইটকামারী গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী বাছেদ মিয়া একই এলাকার এক গৃহবধূকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। তাদের এই প্রেমের সম্পর্কের কথা বাইটকামারী বাজারের প্রায় সব দোকানিই জানেন। তারা অনেকেই বলেন, বাছেদ ওই মেয়েটার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে ঠিক করেনি।

অনেকে আরো জানান, এর আগেও বাছেদের দ্বারা নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। সামাজিকভাবে সালিশও হয়েছে।

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার প্রত্যন্ত বাগুয়ার চরের এক বাড়িতে আশ্রয়ে থাকা নির্যাতিতা ওই গৃহবধূর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমার প্রথম বিয়ে হয় বাইটকামারী গ্রামের মিজান মিয়ার ছেলে বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে। সেখানে সংসার চলাকালীন বাইটকামারী বাজারে জামাকাপড় কেনাকাটা করা হয় বাছেদের দোকানে। সেই সুবাদে হঠাৎ একদিন বিকেলে সুযোগ বুঝে আমার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে আমাকে আচমকা জাপটে ধরে বাছেদ। এ সময় আমার ভাশুর বাড়িতে এলে আমাকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায় সে। তাকে দ্রুত সটকে পড়তে দেখে আমাকে সন্দেহ করেন তিনি। এই সূত্র ধরে আমাকে তালাক দেয় আমার স্বামী।

এর কিছুদিন পর আমার দ্বিতীয় বিয়ে হয় রৌমারী সদর ইউনিয়নের বাওয়ার গ্রামের সোনাউল্লাহ মিয়ার ছেলে আজগর আলীর সঙ্গে। আজগর আলী ঢাকায় গার্মেন্টে চাকরি করার কারণে বেশির ভাগ সময় আমাকে বাবার বাড়িতে থাকতে হতো।

এ অবস্থায় বাছেদ আবার বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। আমি তার অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে না পেরে তার ফাঁদে পা দিই। তার পরার্মশ অনুযায়ী প্রথমে আমি আমার স্বামীকে তালাক দিই। পরে সে আমাকে এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে নিয়ে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং মোবাইলে আপত্তিকর ছবি ওঠায়।

পরে আমি বিয়ের করার জন্য চাপ দিলে আমার কাছ থেকে দামি মোবাইল সেটসহ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। আমি বিভিন্ন সময় আমার গহনা বিক্রি করে তিনটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল সেট ও এক লাখ ২৫ হাজার টাকা বাছেদকে দিই।

এরপরও বাছেদ আমাকে বিয়ে না করে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে। এক পর্যায়ে সে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে, বিয়ের জন্য চাপ দিলে তোমার সঙ্গে তোলা সব আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেব এবং সে তাই করে। ১৭-১৮ দিন আগে আপত্তিকর ছবিগুলো ফেসবুকে ছেড়ে দেয়।

এসএইচ-১৭/০৯/২১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)